শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬

ঈশ্বরের কি একটি শুরু আছে?

বাইবেল এভাবে বলে -- 
গীত ৯০ঃ ২
পর্বতমালার জন্ম হবার আগে,
তুমি দুনিয়া ও জগকে জন্ম দেবার আগে,
এমন কি, অনাদিকাল থেকে অনন্তকাল তুমিই ঈশ্বর।

এটা কি  যুক্তিযুক্ত?  আমরা যা সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারি না, সেটা কে কি  প্রত্যাখ্যান করব? আর এভাবে প্রত্যাখ্যান করার জন্য বুঝতে না পারার যুক্তিই কি যথেষ্ট! 

উদাহরণ বিবেচনা করুন:
(১) সময়ঃ কেউ সময়ের শুরুটাকে নির্দিষ্ট করতে পারে না জানে না এঁর শুরু কখন। এবং এটা সত্য যে, যদিও আমাদের জীবন শেষ আছে, কিন্তু সময়ের  নেই। আমরা সময় সম্পর্কে এই  ধারণাকে  প্রত্যাখ্যান করতে পারি না, যদিও আমরা এই বিষয়টা সম্পূর্ণ রূপে আমরা বুঝতে পারি না, কিন্তু এটা আমাদের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং আমাদের জীবনকে এটা পরিমাপ করে। এঁর অস্তিত্ব কে কি অস্বীকার করি?   
 (২) স্পেস :  
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এটার শুরু এবং শেষ খুঁজে পায়নি ।অধিকতর তারা যে মহাবিশ্বের অস্তিত্ব প্রমাণ করেছে, এঁর চেয়ে এখানে আরও বেশি কিছু রয়েছে। তাদের এই প্রমাণ গুলো কি  প্রত্যাখ্যান করা যায়, যেখানে অনেক বিজ্ঞানীরা বলেন যে এঁর শুরু অনাদিকাল থেকে। একই নীতি ঈশ্বরের অস্তিত্বের জন্য কি প্রযোজ্য নয় !  

(১) জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আমাদের জানায় যে,  সূর্যের অন্তঃস্থলে তাপমাত্রা ২৭,০০০,০০০ ডিগ্রী ফারেনহাইট (১৫,০০০,০০০° সি)। আপনি কি এই ধারণা প্রত্যাখ্যান করেন,  কারণ আমরা সম্পূর্ণরূপে এই তাপমাত্রার তীব্রতা পরীক্ষা করতে পারি না?

(২) বিজ্ঞানীরা আমাদের জানায়, আমাদের মিল্কিওয়ে ছায়াপথের আয়তন প্রায় ১,০০,০০০ আলোকবর্ষ প্রশস্ত। এমন একটা আলোকরশ্মির কথা চিন্তা করুন, যেটা প্রতি সেকেন্ডে ৩,০০,০০০ কিলোমিটার পথ পরিভ্রমণ করে। সেই রশ্মির আমাদের ছায়াপথ আড়াআড়িভাবে পার হতে ১,০০,০০০ বছর লাগবে! আর কিছু ছায়াপথ রয়েছে, যেগুলোর আকার আমাদের ছায়াপথের চেয়ে অনেক অনেক গুণ বড়। আপনি এই দীর্ঘতার বিষয় চিন্তা করতে পারেন? হয়ত পারেন না।  তবুও আমরা তা গ্রহণ করি কারণ বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রমাণ এটাকে  সমর্থন করে।


কোনটা  অধিক যুক্তিসঙ্গতঃ মহাবিশ্বের যা জীবন ধারণ করছে, এঁর পেছনে কি বুদ্ধিমান কোণ স্রষ্টা আছে?  অথবা এটা ঘটনাচক্রে অস্তিত্বে এসেছে, এবং এঁর পেছনে কোন বুদ্ধিমান নির্দেশক কেউ নাই? কেউ কেউ সৃষ্টি করটার অস্তিত্বের বিষয় প্রশ্ন তোলে, এঁর কারণ হল- একজন সৃষ্টিকর্তার গুণাবলি ও অস্তিত্ব বিষয়ে কম জ্ঞান থাকার জন্যে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি যে, বিজ্ঞানীরা সম্পূর্ণরূপে জানে না যে কিভাবে জিন কাজ করে, এঁর জীবন্ত কোষ  এবং কোষ গুলোর বেড়ে উঠা। কেউ মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্রম  বিষয় পরিপূর্ণভাবে জানে না। কেউ কি এঁর অস্তিত্ব গুলো অস্বীকার করে?

আমরা কি সত্যিই একজন মহান ব্যক্তিকে সম্পূর্ণরূপে জানাতে পারি যে, এই মহাবিশ্বকে অস্তিত্বে এনেছেন, জটিল নকশা আর বিস্ময়কর আকার দিয়ে! 

কোন মন্তব্য নেই:

About

Ghonokuasha Baskey is a Santal writer of Bangladesh. He has started writing since 1985.