সান্তালদের বিয়ে এবং বর্তমান প্রজন্ম
সান্তালদের সংস্কৃতি নিয়ে বর্তমানে ভাববার অবকাশ আছে। কেন? কারণ পরিবর্তনশীল সাংস্কৃতিক ধারায়, শুধু আবেগকে পুঁজি করে সেই সাংস্কৃতিক চেতনা লালন করা বেশ কঠিন। আবেগের চেয়ে আরও বেশি কিছু করনীয় রয়েছে। যেহেতু ধর্মের সাথে সাংস্কৃতিক কর্ম কাণ্ডের বিরাট সম্পর্ক আছে, তাই এ বিষয়ে সমাজে বিশদ আলোচনা হওয়া দরকার। ধর্মীয় বিশ্বাস পরিবর্তনের ফলে, প্রতিটি ধর্মীয় দল, তারা তাদের মত করে এই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড গুলো নির্ধারণ করেছে। যার ফলে, সান্তালদের সামগ্রিক সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বিরাট টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। এখানে সমাজকে এগিয়ে এসে একটি জায়গা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই জায়গায় সমাজের যেন মাথা ব্যথায় নাই ।
বিয়ে ঃ
সান্তালদের বিয়ের একটি দৃশ্য |
এর অবসান হওয়া উচিত। নতুন প্রজন্মকে এ জন্যে সোচ্চার হতে হবে।
সান্তালদের বিয়ের সময় মুল জায়গায় ধর্ম খুব একটা ছিল না, দাক বাবলা এর জায়গায় কিছুটা ধর্মের গন্ধ হয়ত ছিল কিন্তু এটা গোঁড়া কোন বিশ্বাস ছিল না। হরক, সনুম সাসাং, ছামডা জায়গাগুলোতে ধর্ম খুব একটা নাই।
Sidur সিঁদুর
এটা সান্তালদের চুরি হয়ে যাওয়া একটা প্রথা। এটি ছিল সান্তালদের বিয়ের একমাত্র প্রধান চিহ্ন। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে এটি এখন বাঙ্গালি হিন্দু ধর্মে বা সমাজে প্রবেশ করেছে। ফলে অনেক খ্রিস্টান ধর্মের সান্তালরা এটি আর ব্যবহার করতে চান না। এ রকমটা হয়েছে, কারণ এ বিষয়ে না জানার ফলে। ততমদ্ধেও অনেক খ্রিস্টান ধর্মের সান্তালরা এটি ব্যবহার করছে, আর এ বিষয়টি দেখায় যে, সান্তালরা তাদের সংস্কৃতি বিমুখ হয়নি।
"সিন্দ্রাধান"
সান্তালদের বিয়ের সব চেয়ে বড় ও মুল জায়গা "সিন্দ্রাধান"। এটা এমন একটা প্রথা যেটা দিয়ে সমাজে প্রকাশ পায় যে, একটি ছেলে এবং মেয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ, তারা এই প্রক্রিয়ার পর থেকে স্বামী স্ত্রী।
সনাতন সান্তালি বিয়েতে-- দাউড়াতে ( পরে এ বিষয়ে বর্ণনা দেয়া আছে) কণেকে বসিয়ে বর পক্ষের ৪/৫ জন উপরে তুলে ধরে। ঠিক এঁর সামনা সামনি বরকে "ঘড়া" বা কারো কাদের উপর তোলা হয়, যাতে কণের মুখোমুখি থাকে। বর, কণের ঘোমটার উপর দিয়ে আম পাতা দিয়ে জল ছিটান, ঘোমটা খোলেন, তারপর কণের সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেন। সান্তালি বিবাহে এই প্রক্রিয়াকে সিন্দ্রাধান বলে।
এখানে ধর্মের কোন গন্ধই নাই। যদিও এই ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। কারণ এটা অন্য সংস্কৃতি থেকে এসেছে বা অন্য সংস্কৃতির মত বিষয় সেই জন্যে অনেকে সমালোচনা করে থাকে। কিন্তু এই ব্যবস্থার বিষয়ে আরও ভাবলে হয়ত, ধর্ম বড় কোন বাধা হয়ে দাঁড়ায় না।
বিয়ে কোথায় হবে?
সনাতন সান্তালি বিয়েতে-- দাউড়াতে ( পরে এ বিষয়ে বর্ণনা দেয়া আছে) কণেকে বসিয়ে বর পক্ষের ৪/৫ জন উপরে তুলে ধরে। ঠিক এঁর সামনা সামনি বরকে "ঘড়া" বা কারো কাদের উপর তোলা হয়, যাতে কণের মুখোমুখি থাকে। বর, কণের ঘোমটার উপর দিয়ে আম পাতা দিয়ে জল ছিটান, ঘোমটা খোলেন, তারপর কণের সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেন। সান্তালি বিবাহে এই প্রক্রিয়াকে সিন্দ্রাধান বলে।
এখানে ধর্মের কোন গন্ধই নাই। যদিও এই ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। কারণ এটা অন্য সংস্কৃতি থেকে এসেছে বা অন্য সংস্কৃতির মত বিষয় সেই জন্যে অনেকে সমালোচনা করে থাকে। কিন্তু এই ব্যবস্থার বিষয়ে আরও ভাবলে হয়ত, ধর্ম বড় কোন বাধা হয়ে দাঁড়ায় না।
বিয়ে কোথায় হবে?
সান্তালদের ঐতিহ্যগত ভাবে বিয়ে- বিয়ে বাড়িতে "ছামডা লাতারে" ( বর বা কণের নিজ বাড়িতে কলা পাতার ছাউনিতে ) হওয়া উচিত। এটাকে গির্জাঘরে নিয়ে যাওয়ার কোন কারণ আমি দেখি না।
Daura দাউড়া
এটি বাঁশের তৈরি ডালা। যাতে কণেকে বসানো হয়।
খ্রিস্ট ধর্ম মতে এটি ব্যবহারে কোন বাধানিষেধ নাই, তবে খ্রিস্টান ধর্মের সান্তালরা অনেকেই এটা ব্যবহার করছেন না। কেউ কেউ এভাবে যুক্তি দিয়ে থাকে যে, এটি বিদিনদের (সনাতন ধরমালম্বি) । বর্তমানের খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী সান্তালরা এটি ব্যবহার করতে পারে। যে আশীর্বাদের জল পুরোহিত তাদের মাথায় ছিটিয়ে দেন, সে রকম আশীর্বাদ Daura, Lota dak কে করা যেতে পারে।
Dak বাপলা
সনাতনী সান্তালি বিয়েতে যে প্রধান বিষয়গুলো করা হয়, এঁর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা হচ্ছে - দাক (Dak- পানি) বিয়ে। এটি কি কারণে করা এতে ধর্মীয় বিশ্বাস আমার মনে হয় খুব কম আছে। এখানে অনেক গুলো বিষয় নিদর্শন, চিহ্ন, প্রথা। dak বাপলা বিষয়ে অনেকের অনেক রকম মত আছে। পানিকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অনেক সময় দেখা হয়, এটা দেবতার রূপ ধারণ করে, আশীর্বাদের একটা অংশ হয়। আবার কারো কারো মতে এটা পরিশুদ্ধ করার একটা প্রক্রিয়া। যদি এটা সাধারণ অর্থে অর্থাৎ পরিশুদ্ধতার জন্যে করা হয়, তাহলে খ্রিস্ট ধর্মে বিধিনিষেধ নেই। আমার জানা মতে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বিরা dak বাপলা করে, তবে অনেকে বাস্তব জল ব্যবহার করে, আবার অনেকে রূপক ভাবে এটা করে।
Daura দাউড়া
এটি বাঁশের তৈরি ডালা। যাতে কণেকে বসানো হয়।
খ্রিস্ট ধর্ম মতে এটি ব্যবহারে কোন বাধানিষেধ নাই, তবে খ্রিস্টান ধর্মের সান্তালরা অনেকেই এটা ব্যবহার করছেন না। কেউ কেউ এভাবে যুক্তি দিয়ে থাকে যে, এটি বিদিনদের (সনাতন ধরমালম্বি) । বর্তমানের খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী সান্তালরা এটি ব্যবহার করতে পারে। যে আশীর্বাদের জল পুরোহিত তাদের মাথায় ছিটিয়ে দেন, সে রকম আশীর্বাদ Daura, Lota dak কে করা যেতে পারে।
Dak বাপলা
সনাতনী সান্তালি বিয়েতে যে প্রধান বিষয়গুলো করা হয়, এঁর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা হচ্ছে - দাক (Dak- পানি) বিয়ে। এটি কি কারণে করা এতে ধর্মীয় বিশ্বাস আমার মনে হয় খুব কম আছে। এখানে অনেক গুলো বিষয় নিদর্শন, চিহ্ন, প্রথা। dak বাপলা বিষয়ে অনেকের অনেক রকম মত আছে। পানিকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অনেক সময় দেখা হয়, এটা দেবতার রূপ ধারণ করে, আশীর্বাদের একটা অংশ হয়। আবার কারো কারো মতে এটা পরিশুদ্ধ করার একটা প্রক্রিয়া। যদি এটা সাধারণ অর্থে অর্থাৎ পরিশুদ্ধতার জন্যে করা হয়, তাহলে খ্রিস্ট ধর্মে বিধিনিষেধ নেই। আমার জানা মতে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বিরা dak বাপলা করে, তবে অনেকে বাস্তব জল ব্যবহার করে, আবার অনেকে রূপক ভাবে এটা করে।
দাউরা আর সিন্দূরের পরিবর্তে - সোনার আংটি, সাদা গাউন আর সাদা পোশাকধারীর সামনে প্রতিজ্ঞা। ব্যাপারটা যেকোনভাবে হয়ত ব্যাখা করা যেতে পারে, তবে এটা কোন ভাবেই সান্তাল সংস্কৃতির সাথে যায় না। তাহলে করনীয় কি?
এখানেই আলোচনার অবকাশ রয়েছে। সামাজকে বসে এটা ঠিক করতে হবে। কিন্তু সমাজ কোথায়? সমাজ তো থাকে গির্জা ঘরের দালানে অথবা আর একটা সমাজ যেটা ঠুঁটো জগন্নাথ, থাকে কুলহি ধুড়িতে, হাণ্ডি পেলে সতেজ হয়ে উঠে।
সাংস্কৃতির বিষয়ের সাথে খ্রিস্টান ধর্মের একটা জায়গায় পার্থক্যগত দিক আছে। সেটা হল বিশ্বাস।
এখানে খ্রিস্টান ধর্ম যে বিষয়টির উপর জোর দেয়, তাহলো আমি বা আপনি কি খ্রিস্ট ছাড়া অন্য কিছুর উপর বিশ্বাস স্থাপন করছেন বা করছি কিনা?
।
বিয়ের জায়গাটাতে খ্রিস্টান ধর্মের সান্তালরা, আদি সান্তালদের অনেক কৃষ্টি পালন করে আসছে। এ ক্ষেত্রে যত টুকু পালন হচ্ছে না, এটা খ্রিস্টানরা ধীরে ধীরে করছে এবং সংস্কৃতির এই জায়গাটাতে খ্রিস্টানরা ফিরে আসছে বলে আমার মনে হয়।
সাংস্কৃতির বিষয়ের সাথে খ্রিস্টান ধর্মের একটা জায়গায় পার্থক্যগত দিক আছে। সেটা হল বিশ্বাস।
এখানে খ্রিস্টান ধর্ম যে বিষয়টির উপর জোর দেয়, তাহলো আমি বা আপনি কি খ্রিস্ট ছাড়া অন্য কিছুর উপর বিশ্বাস স্থাপন করছেন বা করছি কিনা?
।
বিয়ের জায়গাটাতে খ্রিস্টান ধর্মের সান্তালরা, আদি সান্তালদের অনেক কৃষ্টি পালন করে আসছে। এ ক্ষেত্রে যত টুকু পালন হচ্ছে না, এটা খ্রিস্টানরা ধীরে ধীরে করছে এবং সংস্কৃতির এই জায়গাটাতে খ্রিস্টানরা ফিরে আসছে বলে আমার মনে হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন