হুশিয়ার থাকুন ! অলচিকি লিপিকে না বলুন !!
হুশিয়ার
থাকুন ! অলচিকি লিপিকে না বলুন !!
সম্প্রতি গোটা ভারত সান্তালি সাহিত্য সভা
জনস্বার্থে একটি লিফলেট প্রকাশ করে। বাংলাদেশের জনগণ সেই লিফলেটের ভাষ্যের সাথে সম্পূর্ণরূপে সহমত। নিম্নে লিফলেটটির
সম্পূর্ণ বক্তব্য বাংলাদেশের সান্তালি
ভাষার অক্ষুণ্ণ রক্ষার্থে তুলে ধরা হলঃ
উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য এবং দাবী
১। সান্তালি
ভাষার মাধ্যমে প্রাথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়
স্তর পর্যন্ত শিক্ষাদাবনের ব্যবস্থা করা।
২। প্রাথমিক স্তরে
রোমান অথবা বাংলা অথবা দেবনাগরী লিপিতে সান্তালি শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা।
৩। মাধ্যমিক
স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত রোমান লিপির মাধ্যমে সান্তালি শিক্ষা ব্যবস্থা
চালু করা।
সার কথা
১। অলচিকি লিপি একটি মৌর্যযুগের ব্রাহ্মী
লিপিমালা, গথিক লিপিমালা, দক্ষিণ ভারতীয় লিপিমালা ইত্যাদি থেকে সংগৃহীত।
২। অলচিকি লিপির উচ্চারণ প্রকৃত সান্তালি
বর্ণমালার উচ্চারণ নয়।
৩। সি, এস, উপাসক লিখিত ‘দ্যা হিস্ট্রি এন্ড
প্যালিওগ্রাফি অফ মোরিয়ান ব্রাহ্মী স্ক্রিপ্ট’ গ্রন্থের ১৯১, ২৪১, ২৮৪, ২৮৮, ২৮৯,
৩০৯ পৃষ্ঠায় দর্শিত লিপিমালার সঙ্গে অলচিকি লিপির হুবাহু মিল আছে।
৪। গোথিক লিপিমালার ‘ডি’ এবং ‘পি’ প্রতিরূপ লিপি
অলচিকি ‘ইর’ এবং ‘ইঞ’ লিপির হুবাহু মিল আছে।
৫। এল ব্লুমফিল্ড
এর ‘ল্যাঙ্গুয়েজ’ গ্রন্থে অবস্থিত চারটি
লিপির সঙ্গে অলচিকি লিপির মিল দেখতে পাওয়া যায়।
৬। অবশিষ্ট
অলচিকির লিপিগুলি দক্ষিণ ভারতীয় লিপিচিত্রের সঙ্গে অবিকল মিল দেখা যায়।
৭। রঘুনাথ মুরমু ‘দ্যা হিস্ট্রি এন্ড প্যালিওগ্রফি অফ মোরিয়ান ব্রাহ্মী স্ক্রিপ্ট’ ও অন্যান্য গ্রন্থের লিপিমালা থেকে অবৈজ্ঞানিকভাবে লিপি সংগ্রহ করেছেন এবং রোমান সান্তালি ধারা ও চিহ্ন অনুকরণ করেছেন।
৮। অলচিকিতে ‘ক’
কে ‘আক’, ‘জ’ কে ‘আজ’, ‘ল’ কে ‘অল’, ‘গ’ কে ‘অগ’, ‘র’ কে ‘ইর’, ‘দ’ কে ‘উদ’, ‘প’
কে ‘এপ’, ন কে ‘এন’, ‘ত’ কে ‘ অত’, ‘ঙ’ কে ‘অং’, ‘ম’ কে ‘আম’, ‘ঞ’ কে ‘ইঞ’ ইত্যাদি
উচ্চারণ করা হয়। যেমন ঃ
যদি উপরিলিক্ষিত অক্ষরগুলো দ্বারা অথবা অলচিকি লিপিতে সান্তালি ভাষা সাহিত্যের উন্নতি শুধু ১০০ (একশো) বছরই কেন ১০০০ (এক হাজার) বছর পিছিয়ে যেতে হবে। অতএব মুল কথা হল এক রাজ্যের মানুষ অন্য রাজ্যের মানুষের সঙ্গে জাতিয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যোগাযোগ স্থাপন এবং সান্তালি ভাষা সাহিত্যের উন্নতি, শুধু রোমান লিপিতেই সম্ভব এবং আগেও হবে।
১১। অলচিকি বর্ণমালায় একটি ধ্বনিকেই ২টি পৃথক অক্ষর
দ্বারা এবং ২টি পৃথক ধ্বনিকে একটিমাত্র অক্ষর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে যা
ভাষাবিজ্ঞান বা ধ্বনিবিদ্যাসম্মত নয়।
১২। অবদমিত ব্যঞ্জন ধ্বনি ‘ক’ ‘চ’ ‘ত’ ‘ৎ’ , ‘প’ -এর
পরিবর্তে অলচিকিতে ‘গ’, ‘জ’, ‘দ’, ‘ব’ লেখা হয়। এতে উচ্চারণ নিরূপণে অবাস্তবতা
পরিলক্ষিত হয়েছে এবং ভাষার বিকৃত ঘটেছে। (যেমন- ‘দাক’ কে ‘দাগ’ ‘লাচ’কে ‘লাজ’
‘মেৎ’ কে ‘মেদ’, ‘উপ’ কে ‘উব’, ‘আপ’ কে
‘আব’, ‘দেচ’ কে ‘দেজ’, ‘রেচ’ কে ‘রেজ’ ইত্যাদি) ।
১৩। ডায়াক্রিটিকেল
মার্কস (Tuḍaḱ ar Toyoť) ব্যাবহারেও রোমান সান্তালি লিপির অনুকরণ ঘটেছে।
১৪। অলচিকি অক্ষরগুলির নামকরণ এবং তাদের উচ্চারণ শুধু যে বিদ্ঘুটেমাত্র তা নয়, কোন কোন ক্ষেত্রে অক্ষরগুলির নামের
সান্তালি অর্থ অশ্লীল শব্দ বোঝায় । যেমনঃ
এড় (z)
উপরোক্ত কারণে সান্তাল জনসাধারণ অলচিকি লিপিকে অস্বীকার করেন এবং গ্রহণও
করেন না। অবৈজ্ঞানিক অলচিকি লিপি সান্তালি ভাষার পক্ষে উপযোগী নয়। সান্তালি ভাষার ধ্বনি অনুযায়ী অলচিকি লিপির
ধ্বনিবিন্যাস নেই।
অত্যন্ত
পরিতাপের বিষয়, অলচিকি লিপির বাস্তব গ্রহণযোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও, সংকীর্ণ
রাজনৈতিক কারণে অলচিকির সমর্থকের দ্বারা অবৈজ্ঞানিক, ক্রুটিপূর্ণ এবং অনুকরঙ্কৃত
অলচিকি লিপিকে সান্তালি ভাষার সাধারণ জনগণের উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা
চালাচ্ছে। আশ্চর্যের কথা হল যারা না বুঝে অলচিকির প্রচার প্রসারে লেগে আছেন, ঐ সব
লোকেরা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার (হক)কে না বুঝে হনন করে চলেছে।
অলচিকির
সমর্থকেরা নিজেরাই অলচিকি জানেন না এবং তাদের নিজেদের সন্তানরাও অলচিকি লিপির মাধ্যমে সান্তালি
ভাষা পড়তে লিখতে জানে না। এই তথাকথিত অলচিকি সমর্থক সমাজদরদিরা গরিব ও সরল গ্রামীণ
জনতার সন্তানদের জন্যও অলচিকি লিপিতে সান্তালি ভাষায় পঠনপাঠনের কথা বলে থাকে
কিন্তু অলচিকির সমর্থক খ্রিস্টিয়ান মিশনের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে রোমান লিপিতে
নিজের সন্তানদের পড়াশুনার জন্য পাঠায়। এরা রোমান লিপির মাধ্যমে নিজ সন্তানদের
ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে কোন চেষ্টায় আর বাকি রাখেনি, অথচ রোমান লিপির
মাধ্যমেই সান্তালি শিক্ষাদানের ব্যবস্থার কথা উঠলেই এনাদের গা জলে ওঠে কেন?
পরিবর্তনের পর, আশা করা গিয়েছে যে সান্তালি
ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি এই সরকারি বৈষম্যমূলক আচরন্রের অবসান ঘটবে। কিন্তু
বাস্তবে দেখা গেলো যে, কতিপয় ভেকধারী তথাকথিত সমর্থকদের দ্বারা এই জনদরদি সরকারও
ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে। এই ভেকধারীরা আগের মতই অবৈজ্ঞানিক, ক্রুটিপূর্ণ ও
অনুকরণকৃত অলিচিকি লিপিকে সাধারণ
সান্তালিভাষী জনগণের উপর চাপিয়ে দেবার কাজে বর্তমান সরকারকে ব্যাবহার করার চেষ্টা
চালাচ্ছে।
১৫। কোনও ভাষা লেখার জন্য কি লিপি বা কি কি লিপি
সরকার বা আম জনতা দ্বারা ব্যবহৃত হবে, এই বিষয়টি ভারতীয় সংবিধানের ‘রাজ্য তালিকা’
বা ‘ যৌথ (রাজ্য-কেন্দ্র) তালিকায় কখনো অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, এটি সম্পূর্ণরূপে
কেন্দ্রীয় সরকারের একতিয়ারভুক্ত বিষয়।
১৬। অলচিকির সমর্থকেরা এবং নেতা নেত্রী মন্ত্রীরা
দুটি মিথ্যা কথা পরিষ্কার ভাবে বলে থাকে -
ক)
অলচিকি- ভাষা, অলচিকি ভাষা এবং
খ)
অলচিকি লিপি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
কিন্তু
বাস্তবে অলচিকি লিপি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, শুধু সান্তালি ভাষা
অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ভারতীয় সংবিধান অষ্টম তপশীলে অদ্যাবধি মোট ২২টি ভাষা ‘সরকারই
ভাষা’ রূপে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে সান্তালি ভাষা একটি। এই ভাষাগুলি মধ্যে
ভারত সরকার কেবলমাত্র ‘হিন্দি’ এবং ইংরেজি’ ভাষা দুটি সরকারই কাজকর্ম লেখার
ক্ষেত্রে লিপি হিসাবে যথাক্রমে ‘দেবনাগরী’ এবং ‘রোমান’ লিপি দুটিকে নির্দিষ্ট করে
দিয়েছেন, বাকি ভাষাগুলি লেখার ক্ষেত্রে তেমন কোনও কেন্দ্রীয় সরকারই আদেশনামা নেই।
অর্থাৎ,
সান্তালি ভাষাসহ অন্যান্য ‘সরকারই ভাষা’ গুলি লেখার কোন একটি ‘বিশেষ’ লিপি
নির্দিষ্ট করে দেওয়া নেই, এবং দেশে (ভারতবর্ষে) প্রচলিত সবকটি লিপিই এই ক্ষেত্রে
সমানভাবে স্বীকার করা হয়ছে।
১৭। অলচিকির সমর্থকেরা বলে থাকে যে, ‘রোমান’ লিপি
একটি অ-সান্তাল লিপি, যা কিনা ‘সাহেবদের দ্বারা , তাদের ভাষা চর্চার কাজে ব্যব্হৃত
হলে নাকি সান্তালদের জাত যাবে, মানে তাদের জাতিসত্তাই নাকি বিপন্ন হয়ে পড়বে এই
কথাটা ঠিক নয়, এটি অসত্য কথা।
১৮।
এই কুযুক্তি শুনে মনে প্রশ্ন জাগে -
বহুকাল থেকেই তো আসাম, মুনিপুর, ত্রিপুরা প্রভৃতি রাজ্যের অবাঙালি জনগণ বাংলা
লিপিকে আশ্রয় করেই তাদের নিজ নিজ মাতৃভাষা চর্চা করে আসছেন, কই তারা তো নিজেদের
জাতিসত্তা হারিয়ে বাঙ্গালি হয়ে যাননি? একিভাবে দেখা যাবে, পশ্চিমবাংলার সান্তাল
জনগণ বহুদিন থেকই বাংলা ভাষা ও বাংলা লিপির মাধ্যমে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে
পড়াশুনা করে আসছেন, অনেকই শো শো ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত, কই তারা তো নিজেদের জাতকুল
হারিয়ে মুরমু থেকে মুখারজি, বেসরা বা বাস্কে থেকে ব্যনারজি হয়ে যাননি। একই কথা
খাটে ঝাড়খণ্ড বিহারে সান্তালদের ক্ষেত্রে, যারা হিন্দি ভাষা ও ভাষা ও দেবনাগরী
লিপির মাধ্যমে পড়াশুনা করেও সেই সান্তালি রয়ে গেছেন। কই তারাতো সান্তাল থেকে
হিন্দু ব্রাহ্মণ, হিন্দু পণ্ডিত বা হিন্দু কায়স্থে পরিণত হননি? তবে? রোমান লিপিরবিরোধিতার
এ রকম সংকীর্ণ মনোভাব কেন? রোমান লিপি তো রোমানদের কাছ থেকে নেওয়া, কই ইংরেজ,
ফরাসি স্পেনীয়, ডাচ ওলন্দাজ, স্কট, জার্মান প্রভৃতি জাতির লোকেরা তো রোমীয় বা
ইতালি হয়ে যাননি। ভারতসহ বিভিন্ন দেশের
বিভিন্ন জাতি রোমান লিপির মাধ্যমে ইংরেজি পড়শশুনা করছে, সেই সব জাতি তো ইংরেজ হয়ে
যায়নি? অথচ রোমান লিপির ব্যাবহার করেও নিজ নিজ জাতিসত্তা বজায় রেখেই যুগের সঙ্গে
তাল মিলিয়ে উন্নতির পথে এগিয়ে চলেছেন। সান্তালদের ক্ষেত্রেও তাদের মাতৃভাষা চর্চার
জন্য রোমান লিপি ব্যাবহার তাদেরকে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক
প্রসরে উন্নতির পথিক করে তুলবে, তাদের জাতিসত্তা বিপন্ন হবার পরিবর্তে আরও
উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে।
১৯। ভারত একটি ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র, এখানে যে
কোনও ব্যক্তি নিজ রুচি ও ইচ্ছা অনুযায়ী অবাধে যে কোনও ধর্ম বা নাস্তিকতা পালন করতে
পারেন। কিন্তু সম্প্রতিকালে দেখা যাচ্ছে যে, একটি সারথন্নেষী রাজনৈতিক নেতা নিজে
কোন সময় J.D.P করে আবার অন্য সময় B.J.P
করে।
সেই মিথ্যাবাদী রাজনৈতিক নেতাটি সরলমতি সান্তাল আদিবাসীদের এই বলে বিভ্রান্ত করছেন
যে - সান্তালদের একমাত্র স্বীকৃত ধর্মের নাম হল ‘সারণা’, যে বা যারা এই ধর্ম পালন
করেন না, তারা সান্তাল বা আদিবাসি বলে পরিগণিত হতে পারেন না। অথচ, সত্যি কথাটা হল
- সান্তালদের আদি ধর্মের নাম ‘সারি’ ধরম’ সারনা নয়। এছাড়াও সান্তালরা বর্তমানে অন্যান্য
বিভিন্ন ধর্ম বিশ্বাস অনুশীলন করছেন, যে অধিকার ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী
প্রশ্নাতীতভাবে তাদের বা যে কারোরই রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ থাকে যে মহামান্য পাটনা
হাইকোর্টের রায়ে বহু পূর্বেই এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে - একজন আদিবাসি সান্তাল তার
পছন্দ অনুযায়ী যে কোন ধর্ম পালন করতে পারেন, তাতে তার আদিবাসিত্তের বা তদনুযায়ী
অধিকারসমূহের কোন হেরফের ঘোটে না। এই বিভ্রান্তকারি ও বিভেদকামী রাজনৈতিক অশুভ
শক্তির ধারক বাহক ও দালালদের থেকে সাধারণ সান্তাল জনগণ সতর্ক থাকুন।
২০। অনেক ভাষাবিদ ও শিক্ষা বিশেষজ্ঞর মতে, অলচিকি
লিপি একটি বিকলাঙ্গ শিশুর মত, শুনতে, বলতে, দেখতে ঘ্রাণে, স্পর্শে ও চলতে
অক্ষম। নিকটভবিষ্যতে এর মৃত্যু সুনিশ্চিত।
অলচিকির নির্মাণকর্তা রঘুনাথ মুরমুর ধ্বনি বিজ্ঞান এবং অক্ষর বিজ্ঞানে কোন জ্ঞান ও
পাণ্ডিত্য ছিল না। জ্ঞান না থাকার কারণে তিনি সান্তালি ভাষার ৪৭টি অক্ষরের পরিবর্তে
মাত্র ৩০টি অক্ষরই বানাতে পেরেছেন, এই কারণেই অক্ষরের উচ্চারণ কাল্পনিক এবং
আন্দাজের উপর তৈরি করেছেন। সান্তালি ভাষাতে কত স্বরবর্ণ এবং কত ব্যঞ্জন বর্ণ আছে তা রঘুনাথ মুরমুর জানা ছিল না। অলচিকি
একটি অবৈজ্ঞানিক (Unscientific) লিপি , তাতে কোন আঁধার (Base)
ও নিয়মনীতি (System)
নেই।
রঘুনাথ মুরমুকে পণ্ডিত উপাধি ফুটবল খেলার সময় দেয়া হয়েছিল। কোন বিশ্ববিদ্যালয় তাকে
পণ্ডিত উপাধি দেয়নি।
সান্তালি
ভাষার জন্য প্রচলিত বিভিন্নগ লিপির মধ্যে কেবলমাত্র রোমান লিপিরই ব্যাবহারিক
উপযোগিতা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত। এই লিপিটি কোনও দেশ বিশেষ, কোন জাতি বিশেষ, কোনও
ধর্ম বিশেষ ও কোনও রাজনৈতিক দল বিশেষের নয়। রোমান লিপির কার্যকারিতা এবং সার্বজনীন
গ্রহণযোগ্যতা আজ কারোরেই সুপারিশের অপেক্ষা রাখে না, তা এক প্রতিষ্ঠিত সত্য।
মানবসভ্যতার অধিকাংশ জ্ঞানভাণ্ডার, সমকালীন জ্ঞান বিজ্ঞান শিল্পকলা চর্চা, সবই
প্রায় এই বিশজননি লিপিকে আশ্রয় করেই উন্নতির পথে এগিয়ে চলেছে। মানবজাতির ভবিষ্যতেও
এই লিপিতে নির্ভর করেই গড়ে উঠেছে এবং এগিয়ে চলছে, ইথিহাসের অমোঘ গতিকে রুখবে,
প্রতিক্রিয়াশীল অলচিকি সারথন্নেশিদের সেই সাধ্য কোথায়? জয় চিরকালই সত্যের হয়েছে
এবং হবেই।
সত্যমেব জয়তে”
আরও
বিশদ জানার জন্যে নিম্ব লিখিতই বইগুলি অবশই পড়ুন -
১।
অলচিকি একটি মৌর্যযুগিয় ব্রাহ্মী লিপি - দুরবিন সরেন
২।
অলচিকি কি ক্রটিয়া- সুকুমার হেম্ব্রম
৩।
সান্তালি ভাষার জন্য লিপির নিবাচন - ডঃ অনিমেশকান্তি পাল
৪।
অলচিকি এক অবৈজ্ঞানিক লিপি - হানুক হাসদাক
৫।
সান্তালি ভাষার জন্য অলচিকি কেন? – ডঃ সুহৃদ কুমার ভৌমিক
৬।
“সংবিধান অস্থম তপশিলিতে সান্তালি ভাষার স্বীকৃতি” ২২ ডিসেম্বর ২০০৩ সরকারই
আদেশনামা দেখুন।
সান্তাল
সান্তালিতে কথা বলে।
সান্তাল
সান্তালিতে গান গায়।
সান্তাল
সান্তালিতে কাঁদে।
সান্তাল
সান্তালিতে পূজার্চনা করে।
আমরা
সান্তাল, সান্তালি থাকবো।
সান্তালদের একটি ভাষা! একটি লিপি
রোমান লিপি! রোমান লিপি
জয় সান্তালি ভাষা! জয় রোমান
লিপি!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন