রবিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৮

কৃতিমান এবং সান্তাল সমাজ

কর্ম গুনে মানুষ বেচে থাকে। আর এই বেচে থাকা মানুষের অন্তর থেকে মুর্তমান অবয়ব অক্ষের পরিধি পর্যন্ত বহমান । এই অবয়ব পথিকের পথ হাটা অলগলি থেকে প্রান্তর পর্যন্ত যখন ছড়িয়ে পড়ে তখন সত্যি সেটা মানস পট থেকে আরও বিস্তৃত আর নিগাড় পরিধি অতিক্রম করে বহুদূর চলে যায়।  এই চলে যাওয়া বয়ে যাওয়া  স্রোতধারায়,  চিন্তায়, মননে, কর্মে - আমরা কোথায়? কি করছি?

বিটলস। সারা পৃথিবীতে বিখ্যাত নাম করা ইংলিশ রক ব্যান্ড। জন লেনন,  পল ম্যাককারটনি , জর্জ হ্যারিসন এবং রিঙ্গো স্টার এর সমন্বয়ে ১৯৬০ সালে ইংল্যান্ডের লিভারপুলে প্রতিষ্ঠিত এই রক ইংলিশ ব্যান্ড। কেন এই ব্যান্ডকে সামনে নিয়ে আসা, এই ব্যান্ডের বিষয়ে জেনে আমার, আপনারই বা কি লাভ? না, এমন লাভ ক্ষতির প্রসঙ্গ এমনি এমনি আসেনি। এসেছে কারণ- সমাজের উন্নত চিন্তাশীল তরুণ রক্ত যখন - অভিজ্ঞতাকে বইয়ের পাতার জ্ঞানের কাছে তুরি মেরে ছিটকে ফেলে দেয়- তখন সংশয় জাগে -  সমাজের ভবিষ্যৎ কি? সমাজ কোন দিকে যাবে?

হ্যাঁ, এই লিখনির কারণ- নিজের কোন কৃতিত্বকে জাহির করা নিশ্চয় নয়। শুধু সমাজকে দেখানো যে, আপনি, আমি যা ভাবছি, সেই ভাবনায় - আমি, আপনি এবং পৃথিবী কোথায়? কেউ কেউ যখন বইয়ের পাতাকে সারা পৃথিবী মনে করছে, তখন পৃথিবী কি শুধু বইয়ের পাতার মধ্যে আটকে আছে,  নাকি কোথায় গিয়েছে? অভিজ্ঞতা গুলো অনেক বইকে ছাপিয়ে যায় কিনা, এ তর্কে আমি যেতে চাই না। তবে স্বচক্ষে দেখে শেখা জ্ঞান আর বইয়ের পাতার জ্ঞানের হয়ত বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। কারণ যে জ্ঞান ব্যবহারিক উপায়ে ব্যবহার হয়নি সে জ্ঞানকে কখনই প্রজ্ঞা বলা যেতে পারে না।

চলার পথে বলার স্রোতে বিটলস থেকে একটু মনে হয় ছিটকে গেলাম। দুঃখিত আসলে মনের ভুলে ভুল করে ছিটকে যায়নি, ইচ্ছা করে প্রসঙ্গকে ভাঁজ করে একটু গতি দেয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র । এবার আসুন আসা যাক বিটলস এর প্রসঙ্গে। না আমি বিটলস নিয়ে এখানে কোন কিছু লিখছি না, তাদের নিয়ে লেখার মত আমার কোন জ্ঞান নেই। তবে তাদের নিদর্শন দেখে আমার সমাজের কথা মনে এসেছে, মনে এসেছে আমার সাংস্কৃতিক  সমাজকে। যে সমাজ এর নাম সাংস্কৃতিক কর্ম কাণ্ড দিয়ে প্রকাশ করা যায়, পরিচয় করা যায়। তারা কোথায়, কি করছে?

একজন ব্যক্তি, একজন  ব্যক্তির কর্ম - একটি সমাজকে  দুরে  নিয়ে  যেতে পারে আর এটির উৎকৃষ্ট উদাহরণ হল - বিটলস  । তাদের কর্মময় জীবন, লিভারপুলের পথে  প্রান্তরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আর তাদের পদচারণাকে অমর করে রাখার জন্যে যে সব জায়গা দিয়ে হেঁটেছিল, যে সব জায়গায় তারা প্রোগ্রাম করেছিল, সব জায়গায় তাদের মুর্তি তৈরি করা হয়েছে। এটা দেখায় সেই জাতি কৃতিমানদের সম্মান দিতে জানে এবং কার্পন্য করে না।

আমরা আমাদের কৃতিমানদের কি সঠিক মূল্যায়ন করি? আমরা বিভক্ত হই - বিশ্বাসে - রাজনীতিতে - দেশের সীমারেখায়। এই বিভক্তি আমাদের কি দিয়েছে? কি দিচ্ছে? প্রশ্ন সবার কাছে।

কোন মন্তব্য নেই:

About

Ghonokuasha Baskey is a Santal writer of Bangladesh. He has started writing since 1985.