বাবলু হেম্ব্রমের গলাকাটা লাশ
নিহত বাবলু হেম্ব্রম |
ডানা ঝাপটিয়ে উদাম নাচে,
মরার খোঁজে না,
মারার খোঁজে।
শাসনতন্ত্র নামক যন্ত্রটা,
তাদের পাহারা দেয়,
তাদের জ্বালানি জোগায়।
তন্ত্রমন্ত্রের যাতাঁকলে,
আমাকে ভর্তা বানায়।
আর আমি আধমরা,
অর্ধজাতি,
অর্ধমানব,
ইতিহাসের পাতার নৃ-গৃহীত অজাত,
শকুনদের থাবায় থাবায় ক্ষত-বিক্ষত।
আমার কান্নার রোল মাটির দেয়ালে আটকা পড়ে,
চোখের গরম অশ্রু শুকিয়ে যায় ছাই দিয়ে লেপা মেজেতে ।
শকুনদের ধারালো নখের আঘাতে উঠানটাও বিদীর্ণ।
আমার ঠাঁই এখন ঝুপড়ির মধ্যে বড়ই জরাজীর্ণ।
শকুনদের লোলুপ দৃষ্টি থাকে ঠাঁয়ের দিকে,
ছিনিয়ে নেওয়ার তরে ছাড়ে না আধমরা মানুষটাকে।
দিনের আলোয় চায়ের কাপে, জলের গ্লাসে, ঘৃণা ভরা দৃষ্টি।
রাতের আধারেই কালো শরীরে আবার কামনার লুটোপুটি।
আমার এ হাহাকার-চিৎকার শোনে কেউ,
আমার এ আর্তনাদ বোঝে না কেউ।
শুধু তাদের তরে তারা ঝান্ডা উড়ায় নিজেদের,
আমাকে বিক্রি করে মিছিল আর সভা সেমিনার।
আলফ্রেডদের জন্য কালো ব্যাজে মিছিল চলে,
ঢুডু সরেনের রক্ত পত্রিকার পাতায় ঝড় তোলে।
অভিদিয় মারান্ডীর রক্ত নিরবে ডুকরে কাঁদে।
আশ্বাসের ঝুড়িটা ফুলে ফেঁপে উঠে,
বেলুন হয়ে কখনও ফাটে, কখনও উড়ে।
তারপরও বাবলু হেম্ব্রমেরা গলাকাটা লাশ হয়,
মহেশ্বর হেম্ব্রমরা কষ্টের যন্ত্রনায় ছটপট করে,
ডুকরে ডুকরে কাদঁতে থাকে শান্তি টুডুরা।
এই কি আমার দেশ?
এই কি আমার মাটি?
এই কি আমার জননী?
যাকে বুকে ধরে অনেক আদরে করে বলি-
এ আমার।
এ আমার।
এ একান্ত আমার।
শুধুই আমার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন