বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

৬:৪৯:০০ PM

ব্যানার পরিষদ এর বিজ্ঞাপন ও বাংলাদেশের সান্তাল যুব সমাজ



সময়ের স্রোতে ইতিহাস অন্য রকম হয়ে যায়। এর জ্বলন্ত প্রমাণ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। এক সময় যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, এরা একটা সময় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তাদের গাড়িতে উড়ায়। এরাই সত্যিকারের বাংলাদেশি হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে আর প্রমাণ স্বরূপ বাংলাদেশ তাদের সর্বোচ্চ মর্যাদার আসনে বসায়।

এই ইতিহাস আমাদের সান্তাল সমাজের বেলাও যেন সত্যি হয়ে যাচ্ছে। কিভাবে?

এক সময়কার ব্যানার সর্বস্ব বাম রাজনীতির তাবেদারেরা আজ সাচ্চা আদিবাসি হয়ে যাচ্ছে।  বাংলাদেশের বিরোধীদের যেমন বিরাট সাপোর্টার আজ বাংলাদেশে বিদ্যমানঠিক তেমনি এই এক সময়কার আদিবাসি নামক ফেরিওয়ালাদের অনেক শিক্ষিত বিবেকবান মানুষ আজ সাপোর্ট করতে শুরু করেছে।  

কেন এই সাপোর্ট?

এই মুহূর্তে সান্তাল সমাজের দিকে যদি ভাল করে তাকাই, কিছু বিষয় লক্ষ্যনীয়- যেমন

) যুব সমাজের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে;
একদিকে স্বপ্ন, এক দিকে অর্থনৈতিক অনাটন, এক দিকে উন্নত সমাজের  ঝলকানি, দিকে নিজেদের সঙ্কীর্ণতা। রকম এক ভারসাম্য হীন অবস্থায় চিন্তার চেতনার মতিভ্রম হওয়া স্বাভাবিক। সান্তাল যুব সমাজের সেটিই হচ্ছে।

) যারা সমাজকে বিকেয়ে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে- তাদের পেছনে যুব সমাজ কেন?
প্রাপ্তি সব মানুষের প্রিয় বিষয়। ব্যানার নামক বিজ্ঞাপন গুলো তাদের একটা জায়গায় নিয়ে গিয়েছে। যেমন-

) সরকারের নজরঃ
এই সুবিধা নিয়ে তারা কিছু সুযোগ সুবিধা উপভোগ করার সুযোগ পাচ্ছে, সেখানে শিক্ষিত কিছু যুব সমাজের  পিছু নেয়াটাই  - স্বাভাবিক। সে কারণে অনেক শিক্ষিতরা তাদের তাঁবেদারি করছে। (এখন সরকারি আদিবাসি স্পন্সরশীপ/বৃত্তি প্রায় সব জায়গায় তাদের দখলে চলে গিয়েছেএটার জন্যেও তো সান্তাল যুবক-যুবতীরা তাদের পেছনে দৌড়াবে, তাই না?

) NGO দের নজরঃ
হ্যাঁ এটা আসলে নগদ প্রাপ্তি। এই ব্যানারের বিনিময়ে তারা নিজেদেরকে পরিচিত করতে পেরেছে, যার ফলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে তাদেরকে ডাকা হয়, বিদেশে হাওয়াই জাহাজে চড়ে তারা ঘুরতে পারে। রকম লোভনীয় জায়গায় কেন সান্তাল যুবকরা ভিড় করতে চাইবে না?

) সমাজে সংগঠন না থাকাঃ
যে বনে বাঘ থাকে না, সে বনে বিড়ালিই বাঘ হয়ে যায়। এদের বেলাও তাই হয়েছে।

গিভ এন্ড টেকঃ
সারা দুনিয়ায় তাকালে সব জায়গায় দেখবেন, দেয়া নেয়ার ব্যাপারটা রয়েছে। তাই এই ব্যানারদের যারা দিচ্ছে, তারাও কিছু নিচ্ছে। এই নেয়াটা অনেক সঙ্গোপনে, লোক চক্ষুর আড়ালে। আর দেয়া টা কখনো সুবিধা ভোগ , কখনো নীরবতার অসুখ, কখনো চোখ থাকিতে অন্ধ। পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় ইতিহাস নাকি সাগর সেচেছে, আর তো একটা ল্যাংড়া জাতি, একে বেচতে তো সময় লাগে না।

৪) সমাজে নৈতিক অবক্ষয়তাঃ
একটা সময় নিজেকে সান্তাল বলে পরিচয় দিতে খুব ভাল লাগত, কারণ নিজেকে সে নামে পরিচয় দিলে লোকেরা বলত “ভাল মানুষ”, কিন্তু এখন কি বলে জানেন? একটা নিগৃহীতার সুরে, কিছুটা শ্লেষ মিশিয়ে - “সাতাল”। খাওয়ার দোকানে আমার চায়ের কাপ, খাওয়ার প্লেট, জলের গ্লাসও আলাদা হয়ে যায়। এখনকার যুব সমাজকে লোকেরা কি নাম দিচ্ছে - আমি ঠিক বলতে পারব না, তবে দু একজন যে বাটপার নাম পাচ্ছে এ বিষয়ে হলপ করে বলতে পারি। আজকে আমরা যুব সমাজরা অন্যদের কাতারে যাওয়ার জন্যে মরিয়া, কিন্তু আমাদের যাওয়ার রাস্তাটা কি ঠিক আছে কিনা আমরা বুঝতে পারছিনা, তাই দ্রুততার সাথে চলতে চলতে আমরা নিজেরা নিজেদের খেই হারিয়ে ফেলছি। মাঝে মাঝে নৈতিক অনৈতিক এর পার্থক্যটা ভুলে যাচ্ছি। একটা উদাহরণ দেই--
ক) ব্যানার পরিষদ একটা সময়, সমাজের অর্থা আদিবাসি সমাজের বিচারের দালালি করেছে, সেখান টু পায়েস কামিয়েছে।
খ) সান্তালদের প্রাণের দাবি সান্তালি হরফে সান্তাল শিশুরা সান্তালি শিখবে, সেই বাড়া ভাতে বেগুণ চালিয়ে দিয়েছে।
গ) ব্যানার পরিষদ অআদিবাসি লোকেদের হাতের পুতুল হয়ে পুরো আদিবাসি সমাজকে নাচ্চাছে।
ঘ) ইতিমধ্যে তারা সমাজে বড় ধরনের বিভেদ তৈরি করে ফেলেছে, সান্তাল জাতিকে তারা ধর্মীয় পরিচয়ের আবর্তে আবদ্ধ করে টুকরো টুকরো ভাগে বিভক্ত করে দিয়েছে। এটাও আবার করেছে, নাস্তিকতাবাদের ছাতার তোলে দাঁড়িয়ে, তাদের ছত্রছায়ায়।
উপরোক্ত কয়েকটি মৌলিক বিষয়ে, তারা ইতিমধ্যে সফল হয়েছে। তাদের সফলতাকে আরও দ্রুতগামী করে তুলছে, কিছু যুবক যুবতী যারা নৈতিক অনৈতিক প্রভেদ বা প্রশ্নগুলো বিবেচনা না করেই পাগলের মত তাদের পেছনে ছুটছে। তাদেরকে শেল্টার দিচ্ছে।

বিজ্ঞাপণঃ
বিজ্ঞাপন প্রথমে চোখে ধরে, তারপর মাথায় ঢুকে, তারপর ছুটে হৃদয়ে। একে যত বার বার দেখাবেন ততটাই এ জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। হৃদয়ে যদি একবার গেঁথে যায় তবে ছাড়ানো বড়ই কঠিন, যেমনটা প্রেমের আঠা। ব্যানার বিজ্ঞাপনের ভাষা, এ ভাষার আকুতি আছে, আছে হৃদয় হরণ করার মত আকর্ষণ। এ আকর্ষণে মুসগুল হওয়াও স্বাভাবিক, নেশার মত আসক্তিও পেয়ে বসা অমূলক নয়। কিন্তু তারপরও ভোক্তার হাতে সব কিছু, ভোক্তার শিক্ষিত বিবেকই পণ্যের গুণাগুণ বিচার করবে।

  

সোমবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

৯:১৮:০০ PM

174 টি ভোট = জামানত বাজেয়াপ্ত এবং বাংলাদেশের সান্তাল সমাজ (পর্ব -2)

সবেমাত্র স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের পতন ঘটেছে। বহুদলীয় গনতান্ত্রিক ব্যবস্থার দিকে যাওয়ার জন্য দেশ প্রস্তুত। হ্যাঁ 1991সালের কথা বলছি। সেই স্কুল জীবন থেকে মার্কস, লেলিনদের  মধুময় মন্ত্রে কিছুটা বিভোর ছিলাম। আর খুব অল্প বয়সে ছাত্র ইউনিয়নের পতাকা তলে দাড়িয়ে বর্জুয়াদের বিপক্ষে কড়া কড়া স্লোগান শিখে ফেলেছিলাম। সেই গরমের জ্বরে হয়ত, সব সময় রাজনীতি নামক পোকাটা আমাকে চিবাতো। সেই চিবুনির জ্বরে হোক আর রক্ত গরমের ঝালে হোক এলাকায় রাজনীতির মাঠে প্রবেশ করাটা দৌদিপ্যমান ছিল।


মনে প্রানে যেখানে বামের স্বপ্ন লালন করি, সেখানে তো চুপ করে থাকা বড়ই বেমানান। ঠিকই একদিন আমার স্কুলের ইমতিয়াজ (গনিত পড়াতেন) স্যারের হাতে ধরা পড়ি। স্যার আমাকে ডেকে বললেন,  “তুমি বিকেলে আমার সাথে দেখা কর”। বিকেলে স্যারের কাছে গেলাম, স্যার তার বাইকের পেছনে বসিয়ে নিয়ে গেলেন, সেখানে অনেক মুরুবী বসা। আমি সাইজ এবং বয়সে সব চেয়ে ছোট। পরিচয় করে দিলেন, সবার সাথে , তার মধ্যে তন্ময় দেব এবং আলতাফুজ্জামান মিতা ভাই ছিলেন, তাদের নাম আমার মনে আছে। তন্ময় দা বললেন, বাম করে তুমি কি পাবে? কিছুই পাবে না। এ দেশ স্বাধীন হয়েছে, সবার জন্য, তোমরা আদিবাসি আমরা হিন্দু, আমাদের এ দেশে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করার সময় এখনই। বামে গেলে, সারা জীবন রাস্তায় থাকতে হবে, নতুবা বাটপারি করে খেতে হবে।

কিছুক্ষণ পর মিতা ভাই আমাকে কাছে ডেকে বললেন, এই থানাতে আমাদের কোন ছাত্র সংগঠন নেই। তুমি এর প্রতিনিধিত্ব করবে। আমি তো হ। আগামী সপ্তাহে জননেত্রী গোবিন্দগঞ্জে সভা করবেন, তুমি সংখ্যালগু সম্প্রদায় থেকে জননেত্রীর আগে বক্তৃতা দিবে এবং এই থানার ছাত্রলীগের প্রতিনিধিত্ব করবে। তার দুদিন পর আমাকে যুগ্ন আহবায়ক করে থানা ছাত্রলীগের প্রথম প্রতিষ্ঠাকালীন কমিটি গঠন করা হয়। জননেত্রীর সভা থেকে ফিরে আসার পর। অনেক ভাবনা আর চিন্তায় নিজেকে বিলিন করে দেই। দেশ, স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু এবং আমার অধিকার।

ইতিমধ্যেই নির্বাচনের তফশীল ঘোষনা হয়ে যায়। সুভাষ মন্ডল সরেন আমাকে ডাকেন এবং বলেন, ”বাবু আমাকে তো নির্বাচন করার কথা বলা হচ্ছে।” আমি জিজ্ঞেস করলাম, “কোন দল থেকে?” উত্তর দিলেন, ওয়াকার্স পার্টি থেকে, তুমি আমার ক্যাম্পেইন করে দেও।” আমি বললাম, “ঠিক আছে। কিন্তু কে আপনাকে চিনলো আর কেনই বা আপনাকে দাড় করাচ্ছে?” তিনি জবাব দিলেন, “দিনাজপুর থেকে আমাকে জানানো হয়েছে?” “কিন্তু আমি তো জানি বুদলা উরাওকে বাম মোর্চা থেকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে।” আমি বললাম। তিনি জবাব দিলেন, “ না আমাকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে।”  আমি তো থ, এটা কিভাবে সম্ভব? যে লোক কোনদিনই রাজনীতির মাঠে ছিল না, তাকে এমপি পদে মননোয়ন দিয়ে দিল? হতে পারে কারন ওয়াকার্স পার্টি তো তখনও আমার কাছে পরিচিত ছিল না।

অন্য একটি সংগঠনের দায়িত্বশীল পদে আসীন আমি, তারপরও কিভাবে তাকে সাহায্য করা যায়, তার উপায় খুজতে লাগলাম। কারণ, একজন সান্তাল এমপি মননোয়ন পেয়েছে। আর এ আসনে এত সান্তালদের ভোট। তাকে আমি ভিতর ভিতর সাহায্য করি। ঠিক ভাবনার সাথে কাজ শুরু ।

সন্ধ্যা নামলেই চিকা মারার জন্য বেরিয়ে পড়তাম। কখনো কখনো রাতে আর ফেরা হয়নি। ছাত্রলীগের নেতার কল্যানে সারাদিন এর ওর বাইকে ঘোড়াঘাট থেকে বিরামপুর দিনে রাতে কতবার যে চুসে ফেলে ছিলাম, তা মনে নেই।

ভোটের দিন যতই কাছে আসতে লাগল, ততই বুঝলাম। আদিবাসিরা এ দেশের রাজনীতির যোগ্য নয়। সুভাষ মন্ডল সরেন দেদারসে জমি বিক্রি করে ক্যাম্পেইন করতে লাগল। লাছু পারগানা এলাকার বংশ পরম পরায়  জমিদার। তার ছেলে সুভাষ মন্ডল সরেন জমি বিক্রি করে  রাজনীতি করছে, এটা আমার ভাল লাগেনি। আমি অনুধাবন করতে পারি, কেন ওয়াকার্স পার্টি তাকে নমিনেশন দিয়েছে? কেন ‍ বুদলা উরাঁওকে নমিনেশন দেওয়া হয়নি। আমার কাছে এটা আলোর মত পরিস্কার হয়ে গেল।

ভোটের রেজাল্ট হলো। সুভাষ মন্ডল সরেনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

বিএনপি ক্ষমতায়  এসেছে। ইতিমধ্যে কলেজে প্রথম ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি ছাত্র সংসদে জিএস পদের জন্য নমিনেশন পাওয়ার দাবিদার। কিন্তু প্রথম বর্ষের ছাত্র হওয়ার কারণে আমাকে জিএস পদে প্রতিদ্বন্দিতা করতে দেওয়া হলো না। আমাকে এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দিতা করতে বলা হলো, এজিএস পদের নমিনেশন কিনলাম। কেনার পরই, আমার খুব কাছের বন্ধু রবিউল ইসলাম, আমার বাড়ীতে এলেন। একজন সান্তাল ছেলের বাড়ীতে একজন মুসলমান বন্ধুর আগমন। মাটির দেওয়াল আর জংধরা টিনের চালের নিচে তার আকুতি আমাকে নরম করে তুলল। সে আমাকে বলল, দোস্ত তুই পদটা আমাকে দে। তুই সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ইলেকশন কর।

ইলেকশন করলাম। তুমুল জনপ্রিয়তা ছিল আমার।  তাই কোন ক্যাম্পেইন করতে হলো না। ভোটের রেজাল্ট হলো, আমি ছাড়া আমার প্যানেলের সবাই 200 ভোটেরও  বেশী ব্যবধানে ছাত্রদলের প্যানেলের কাছে হেরে যায়।

আমি আবার পেছন ফিরে থাকাই। আমার মিছিলের সেই দিনগুলোতে প্রতিদিনই প্রায় 10-15 জন সান্তাল ছাত্ররা যোগ দিত। আমার আশ্চর্য লাগে, সেই দিন সান্তাল ছাত্রীরাও আমার মিছিলে সামিল হতো। সান্তালদের রক্তে প্রতিবাদ ছিল এবং আছে। কিন্তু আজ কোথায় হারিয়ে গেল।

সুভাষ মন্ডল সরেনকে রাজনীতি নি:স্ব করেছে। বুদলা উরাঁও রাজনীতি আর সমাজনীতি করতে করতে হারিয়ে গেল। নিকোলাস নামই কোন একজন তারও জামানত বাজেয়াপ্ত হলো। সান্তালরা তাহলে কি রাজনীতির কাছে অসহায়?

ঢাকায় এলাম। সান্তাল স্টুডেন্টস্ ইউনিয়ন (সাসু), বাংলাদেশ গঠনে মনোযোগ দিলাম। 1993 সালে সাসু গঠিত হলো, সারা বাংলাদেশে সান্তালদের মধ্যে একটা প্রানচঞ্চল শুরু হয়ে গেল। ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও সাসু যেন সান্তালদের আশার স্বপ্ন দেখাল।

এরিই মধ্যে হঠাৎ করে রাজপথে ছোট্ট ছোট্ট ঝান্ডা নিয়ে অনিল মারান্ডিরা সামনে এলো। ঢাকায় এলে আমাদের আশ্রয় প্রশয়ে এদিক ওদিক দেখার চেষ্টা করলো। সে সময় সাসু দ্বারা পরিচালিত ঢাকার পারগানা হাউজ তাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছিল। জাতীয় আদিবাসি পরিষদ বলা যায়, সাসু’র হাত ধরেই শিখতে লাগল। শহীদ মিনারের পাদদেশ, অডিটোরিয়াম কিংবা টিএসসি চত্বর, সাসুই তাদের চিনিয়েছিল।

সেই দিন বুঝতে পারিনি, তারা রাজপথে স্বপ্ন বিক্রি করার সূচনা করেছিল। যেখানে সাসু মানুষের কল্যান করার জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা গুলো চালিয়ে যাচ্ছিল। সেখানে আদিবাসি পরিষদ,“আদিবাসি” নামক শব্দটিকে মুলধন করে এগিয়ে যাচ্ছিল। সে সময় এটাকে  জীবিকার মাধ্যমে হিসেবে মনে হয়নি। তবে অনিল মারান্ডীর সময়গুলোতে এখনকার জাতীয় আদিবাসি পরিষদ-এর মত পুরোপুরি রাজপথে আদিবাসি স্বপ্নের ফেরিওয়ালা হয়ে উঠেনি। আর ফলশ্রুতিতে আমার জানামতে 2003 সাল পর্যন্ত সাসু এবং আদিবাসি পরিষদের সম্পর্ক চমৎকার ছিল।

জাতীয় আদিবাসি পরিষদ, আদিবাসি স্বপ্নের ফেরিওয়ালা হয়ে উঠার পেছনে রবীন্দ্রনাথ সরেনের পুরো হাত আছে। কেননা তার ব্যক্তি জীবনকে একটু যদি পর্যালোচনা করেন, তাহলে লক্ষ্য করবেন। কোন চাকুরী বা কাজ ছাড়াই একদিন দিনাজপুর থেকে রাজশাহীতে পাড়ি দিয়েছিলেন লালসালু’র মজিদের মত। সেখানে বামের সালু পরে পুরোটাই এখন লাল হয়ে গিয়েছেন।

একটা সময় আসে, যখন জীবিকা এবং ব্যবসা সংগঠনকে অন্ধ করে দেয়। জাতীয় আদিবাসি পরিষদ তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। জয়পুরহাটের, নগাঁও  এবং রাজশাহীর  ঘটনাগুলো জাতীয় আদিবাসি পরিষদকে সান্তালদের কাছ দুরে সরিয়ে দেয়।

জাতীয় আদিবাসি পরিষদ আরও একটি নতুন খেলায় মেতে উঠে। এ খেলাটাও প্রমান করে যে, তারা ব্যবসায়িক। ধর্মের বিশ্বাসকে পুজি করে সান্তাল এবং আদিবাসিদের বিভক্ত করতে থাকে। প্রায় সরাসরিই ঘোষণা দেয় যে, খ্রিস্টান সান্তালরা আর আদিবাসি নয়।

নতুন প্রজম্ন এই বিভক্তিকে ভাল চোখে দেখেনি। তাদের স্বার্থপরতাগুলোকে এই প্রজম্ন বুঝতে পেরে তাদেরকে দুরে ঠেলে দিয়েছে। কিন্তু সাসু’র প্রতিষ্ঠাকালিন সংবিধান অনুযায়ি, সাসু কখনো কারও ধর্ম বিশ্বাসকে আঘাত করে না। সান্তালদের 12টি পদবির অধিকারী হলেই সে এ সংগঠনে যুক্ত হতে পারে।

সান্তাল স্টুডেন্টস্ ইউনিয়নের বর্তমান নেতৃত্ব দূঢ়তার সাথে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে যে, আমরা বিভক্তি সান্তাল সমাজ চাই না। আমরা একটি একতাবন্ধ সান্তাল সমাজ চাই। ধর্ম, চার্চ এর উর্ধে থেকে সাসু’র বর্তমান সদস্যরা সমাজের উন্নয়নের জন্য কাজ  করে যাচ্ছে।

সেই আমি আমার রাজনীতির জামানতও অনেক আগেই বাজেয়াপ্ত হয়েছে। নি:স্ব সুভাষ মন্ডল সরেন, না ফেরার দেশে গিয়েও নি:স্ব বুদলা উরাঁও। আর শুধু জেগে আছে রাজপথের স্বপ্নের ফেরিওয়ালারা।




 



বৃহস্পতিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৫

৬:৩৫:০০ PM

সান্তালদের সহরায় উৎসব- বর্তমান বাংলাদেশের বাস্তবতা

সহরায় উৎসব:
সান্তালদের  সবচেয়ে বড় উৎসব সহরায় পরব বা পর্ব। সান্তালরা ফসল কাটার পর এই উৎসব পালন

করে থাকে। এই উৎসব পালনের যৌক্তিকতা ভাল ফসল পাওয়ার জন্য তাদের পশু, তাদেরকে সাহায্য করেছে- এই জন্য মারাংবুরুর কাছে এই উৎসবের মাধ্যমে উৎসর্গকরণের উদ্দেশ্যে এই উৎসবটি পালন করা হয়ে থাকে।
এই উৎসব সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বর মাসে সান্তালরা পালন করে থাকে।

প্রথম দিন:
এই উৎসব তিন দিনব্যাপী পালন করা হয় আবার কোন কোন জায়গায় পাঁচ দিনও পালন করা হয়ে থাকে। প্রথম দিনের উৎসবের নাম মুলত: Ũmuḱ পরিস্কৃত

হওয়া। প্রথম দিনে সান্তালরা তাদের পূর্বপুরুষ এবং মারাংবুরুর উদ্দেশ্যে উপাসনা দিয়ে শুরু করে। এই উপাসনা বা  পুজা আর্চনা যেখানে প্রচুর গাছ রয়েছে সেখানে সম্পন্ন হয় অথবা  জাহের থান নামে সান্তালদের উপাসনাস্থলে এটি হয়ে থাকে। জাহেরথান সাধারণত যেখানে গাছপালা বেশী থাকে সেখানে বানানো হয়। আগের দিনে লতাপাতার ছাউনির মত করে এই পুজা মন্ডপ বানানো হত। সেই পুজার স্থানে সবাই একসঙ্গে সমবেত হয়। পুজার আগে  সবার বাড়ি থেকে চাল এবং মুরগী সংগ্রহ করা হয়। এরপর সেই মুরগী এবং চালের কিছু অংশ মারাংবুরু এবং পূর্ব পুরুষদের উদ্দেশ্যে মাঞ্জি হাড়ামের নেতৃত্বে বলি দেওয়া হয়। এখানে মুরগী মাথা মটকিয়ে রক্তগুলো সামনে পাতায় রাখা অল্প চালগুলোর মধ্যে ছিটিয়ে দেওয়া হয়।

পুজা সমাপ্ত হলে সেই মুরগী মাংশ এবং চাল দিয়ে পোলাও খিচুরি রান্না করা হয়। রান্না সমাপ্ত হলে প্রথমে সেই রান্নার একটি অংশ গ্রামের মাঞ্জি হাড়ামকে দেওয়া হয়। সেই রাতে খাওয়া দাওয়া সম্পন্ন হলে পরের দিনের অনুষ্ঠানের জন্য তারা প্রস্তুত হয়।

দ্বিতীয় দিন: 

দ্বিতীয় দিন পুরোটাই পশুদের উদ্দেশ্যে উৎযাপন করা হয়, পশুদের গোসল করানো হয় । এই দিনের
শুরুতে সবাই রান্না করা ভাত এবং একটি করে ডিম নেন। পশুরা যে রাস্তার চলাচল করে সেই রাস্তায় সেগুলো রেখে দেওয়া হয়, যাতে পশুদের আঘাতে ডিম গুলো ভেঙ্গে যায়। এই দিনে পশুদের গোসল করিয়ে পশুদের শরীরে, শিং এ তেল মাখানো হয় এবং পা ধুয়ে দেওয়া হয়। এটা এমন ধরনের উৎসব যাতে পশুদের প্রতি সম্মান দেখানো হয়। এই সব কিছু শেষ হলে সবাই ঘরের দিকে যায়। 
মাঠ থেকে ধানের গাছ নিয়ে আসেন এবং এটা পুজায় এটা ব্যবহৃত হয়। পুজার পর তারা সেই ধানগাছের গোছা পশুদের শিং এ বেঁধে দেয়। সহরায় উৎসবে পূর্ব পুরুষ এবং মারাংবুরুর নামে হান্ডি উৎসর্গ করে থাকে। তারা এই  পুজার মাধ্যমে আর্শিবাদ ও সুখী জীবন কামনা করে থাকে।  এই রাত থেকে পশুদেরকে লোকেরা জাগায় এবং বাড়ী বাড়ী গিয়ে নাচ-গান করে থাকে। তৃতীয় দিন পর্যন্ত এভাবে চলতে থাকে।


তৃতীয় দিন:
উৎসবের তৃতীয় দিনকে বলা হয় Khunṭạo গবাদী পশুদের এক জায়গায় বেঁধে রাখা
এবং একজন
Khunṭạo

ব্যক্তি শুকনো কোন চামড়া সেই পশুটির নাকের সামনে ধরে। এতে পশুটি খিপ্ত হয়ে সেই শুকনো চামড়াটিকে শিং দিয়ে আঘাত করেন। এ রকম বিষয়টি পর পর তিন বার করা হয় এবং প্রতিবারেই ভিন্ন ভিন্ন গান গেয়ে পর্বটি পালন করা হয়ে থাকে। এভাবে প্রতিটি পশুকে তারা বাধার মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘটে।

বর্তমান বাংলাদেশের বাস্তবতা:
সংস্কৃতি সবসময় চলমান একটি প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়াটা মুলত সভ্যতার সাথে সাথে চলতে শুরু করেছে। বিকশমান সংস্কৃতির ধারায় যেমন অনেক কিছু যুক্ত হয়েছে আবার অনেক কিছুই কালের গর্ভে হারিয়ে গিয়েছে। প্রায় সব সংস্কৃতির বিরাট অংশ জুড়ে ধর্ম জাড়িয়ে থাকার দরুন এটা ধর্মীয় বিশ্বাস পরিবর্তনের সাথে সাথে এর প্রকার, এর আচার, এর পরিপালনও পরিবর্তিত হয়েছে। আবার অর্থনৈতিক অবস্থার দরুনও সংস্কৃতির অনেক বিষয়গুলো পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।

বাংলাদেশের বর্তমান সান্তালদের আর্থসামাজিক অবস্থা:
নব্বইয়ের দশক থেকে বাংলাদেশের সান্তালদের বিরাট পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। এখানে শুধু সান্তালদের বললে একটু ভুল বলা হবে। বলা যায় পুরো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটটা কিছুটা বদলে গিয়েছে। বাঙালী সংস্কৃতির জায়গাটাতে ধর্মীয় বিশ্বাস ও অনুশাসন যুক্ত হয়েছে। সান্তালরাও এর বাইরে যেতে পারেনি। আর যাওয়ারও কোন কারণ নেই। কেননা স্রোতের বিপরীতে চলে, টিকে থাকা অনেক কঠিন।

নব্বই দশকে সান্তালদের মধ্যে আমুল কিছু পরিবর্তন সাধিত হয়। এই পরিবর্তনের মুল জায়গাগুলো- অর্থনৈতিক এবং ধর্মীয় বিশ্বাস। অর্থনৈতিকভাবে তারা প্রায় হঠাৎ করে গরীর পর্যায়ে চলে যায়। আর সাথে সাথে সান্তালদের বিরাট অংশ ধর্মীয় বিশ্বাস পরিবর্তন করে। একটি বেসরকারী হিসেব অনুযায়ী বর্তমানে সান্তালরা 95% ভাগই গরীব এবং প্রায় 85% ভাগ ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহন করেছে। এমতাবস্থায় তাদের সংস্কৃতি কি পরিমান বেসামাল হতে পারে, তা একটু গভীর ভাবে চিন্তা করলেই বোঝা যায়।


বাংলাদেশের সান্তালদের সহরায় উৎসব:
সান্তালদের বিরাট অংশ খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহন করার ফলে সান্তালদের সংস্কৃতির অনেক কিছুই হারিয়ে গিয়েছে। তারপরও বাংলাদেশের সান্তালরা তাদের সংস্কৃতির অনেক কিছু করে চলছেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সহরায় পরব, এটার মুল উদ্দেশ্য যা থেকে অনেক সান্তালরা সরে আসেননি। যদিও খ্রিস্টান ধর্মে এ রকম উৎসব পালন করার কোন বিধান নেই, তবুও বাংলাদেশের সান্তালরা তাদের সংস্কৃতির বড় একটি উৎসব সহরায় পরব পালন করছে। বড়দিন আর সহরায়কে একাক্কিভুত করে বর্তমান বাংলাদেশের আধুনিক সান্তালরা সহরায় পর্ব পালন করছে। বড়দিনকে সামনে রেখে তারা এই নতুন সহরায় উৎসবটিকে সাজিয়ে থাকে। সহরায়ের দিনপঞ্জি অনুযায়ে যদিও এটি সংগঠিত হয় না। তবুও ঐ দিন গুলোতে এ রকম ব্যবস্থা কোন কোন গ্রামে দেখা যায়।

এ প্রসঙ্গে বাইবেলের ইতিহাসের দিকে তাকালেও এর মিল পাওয়া যায়। বাইবেলের প্রাচীন ইস্রায়েল জাতির মধ্যে এই উৎসবটি পালন করার প্রচলন ছিল। ভাল ফসল হওয়ার জন্য ইস্রায়েল জাতি, তাদের ঈশ্বর-যিহোবার কাছে প্রথম ফসল উঠার পর উৎসর্গ করত।  ফসল কাটার মরসুমগুলোতে তাদের উৎসবের দিনপঞ্জি ছিল। যিশু খ্রিস্টের মুক্তির মুল্যের বিনিময়ে মোশির ব্যবস্থা হতে আক্ষরিক নিস্তার পাওয়ার পর খ্রিস্টানরা এ রকম উৎসব করে না। 


সান্তালদের প্রাচীন সহরায় পর্বে তাদের আর্শিবাদ এবং সুখী জীবনের জন্য মারাংবুরু এবং তাদের আদি পুরুষদের আত্মার নিকট প্রার্থনা করে সাহায্য চাওয়াটা একটা মুখ্য বিষয় ছিল। বিষয়টি শুধু উৎসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। বিষয়টি বিশ্বাস এবং উপাসনার পর্যায়ে নিমজ্জিত। বর্তমান ধর্মান্তরিত সান্তালরা যখন এ রকম অনুষ্ঠান করেন, তখন বিষয়টি দাড়ায়, দুই কর্তার দাসত্বের মত।

একটা সময় ছিল, যখন বাংলাদেশের সান্তালদের গলাভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ আর গোয়াল ভরা গরু ছিল। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে আজ সান্তালদের গলা ভরা ধান নেই, পুকুর ভরা মাছ নেই, গোয়াল ভরা ধানও নেই। তাহলে কিভাবে এই উৎসব পালন করবে? যে উৎসবটির মুলে রয়েছে, ফসলের জন্য প্রার্থনা, গবাদি পশুর প্রতি সম্মান জানানো। আজ যাদের কিছুই নেই, তারা কিভাবে উৎসবটি করবে?

প্রারম্ভে যেমন বলেছিলাম, সংস্কৃতি সময়ের সাথে পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া। যে কারণগুলোর জন্য সংস্কৃতির এই আচার আচরণ সেই কারণ গুলো যদি না থাকে, তাহলে কি সেটা পালন করা কতটা যুক্তিযুক্ত? পরিবর্তনশীল এই সংস্কৃতির জায়গায় সান্তালরা কি তাদের সংস্কৃতি হারিয়ে ফেলছে? এ রকম প্রশ্নের অবতারণা হতে পারে। এ প্রশ্নের উত্তরে শুধু সান্তালদের দিকে অঙ্গুলি তুললে কিছুটা অন্যায় করা হবে বৈকি। আজ সারা পৃথিবীতে জাতিগুলোর সামনে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষা এবং পরিপালন করা করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে।

কি করা যেতে পারে?

1। সংস্কৃতির মধ্যে ধর্মের সাথে যে বিষয়গুলো সরাসরি যুক্ত, সেই বিষয়গুলো নিয়ে সমাজে আলোচনা হতে পারে। ধর্মীয় বিশ্বাসকে সরাসরি আঘাত করে না বা ব্যহত করে না এমন বিষয়গুলো সান্তালরা পালন করতে পারে। আবার ধর্মীয় অংশটুকু বাদ দিয়েও সেই বিষয়গুলো তারা করতে পারে।
2। সংস্কৃতির বিরাট একটা অংশ জুড়ে কৃষ্টি ও কালচার রয়েছে। যা সরাসরি ধর্মের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়। সেই বিষয়গুলো অনুশীলন করে, বর্তমান সান্তাল সমাজ তাদের পরিচয় বহন করতে পারে। এ ক্ষেত্রে ভাষার সঠিক চর্চার মাধ্যমে একটা জাতির পরিচয় অক্ষুন্ন থাকতে পারে।
3। সংস্কৃতির মধ্যে সমাজ কাঠামোগুলো অন্তর্ভুক্ত। সমাজ কাঠামোকে যদি আর গতিশীল এবং সত্যিকার নিয়ামক করা যায়, তাহলে সান্তাল হিসেবে নিজের পরিচয় টুকু ধরে রাখা সম্ভব।
4। উৎসবহীন জাতি নিরামিষ জাতি। উৎসব বিহীন একটি জাতি কল্পনা করাটাও কঠিন। তাই জীবনে উৎসবগুলো থাকা উচিত। কিন্তু সেই উৎসব গুলোর মধ্যে অবশ্যই উন্নয়ন বা উন্নতির ধারাবাহিকতা থাকা উচিত। অর্থাৎ উৎসবের মধ্যেও যাতে নিজেদের উন্নতি থাকে সেদিকে মনোযোগ দিলে জাতি হিসেবে সান্তালরা আরও এগিয়ে যেতে পারবে।


সময়ের সাথে সারা বিশ্ব যখন এগিয়ে চলছে। সান্তালরা পিছিয়ে থাকবে এমনটা হতে পারে না। দক্ষিণ আমেরিকার অনেক আদিবাসি আজ তাদের সংস্কৃতিকে ঢেলে সাজাচ্ছে। তারা সেটা করেও বিশ্বের কাছে আদিবাসি হিসেবে পরিচিত, সমদৃত। আমরা তাহলে কেন পারবো না? নিশ্চয় পারবো, শুধু আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে, ঠুনকো আবেগ গুলো থেকে। বেরিয়ে আসতে হবে, ধর্মীয় রেষারেষি থেকে।



About

Ghonokuasha Baskey is a Santal writer of Bangladesh. He has started writing since 1985.