বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০১৪

১:০৮:০০ PM

শ্রাবণের বৃষ্টি


সম্প্রতি  সান্তাল স্টুডেন্টস্ ইউনিয়ন ( সাসু), বাংলাদেশ, দিনাজপুর শাখা  এর 30জুন  2014 সান্তাল বিদ্রোহ  ‍উপলক্ষ্যে  E̠BHE̠N ম্যাগাজিন প্রকাশ করে। তাতে এই গল্পটি ছাপা হয়। আমার ব্লগের পাঠকদের জন্য গল্পটির স্ক্যান কপি তুলে ধরলাম।

কৃতজ্ঞতায়: সান্তাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (সাসু), বাংলাদেশ,  দিনাজপুর শাখা।

 পৃষ্ঠা- 1
শ্রাবণের বৃষ্টি- 1

শ্রাবণের বৃষ্টি-2

শ্রাবণের বৃষ্টি-3

শ্রাবণের বৃষ্টি-4

শ্রাবণের বৃষ্টি-5

শ্রাবণের বৃষ্টি-6

বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০১৪

২:০২:০০ PM

উত্তরবঙ্গের আদিবাসি খ্রিস্টানরা নিঃগৃহিত

আমার এ লেখাটি পড়ার সাথে সাথে মনে হতে পারে যে, আমি জাতিগত বিদ্বেষের বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিচ্ছি। আর এই বিষবাষ্প ছড়ানোর অপরাধে আমাকে কেউ কেউ দোষী করলেও করতে পারেন। আমার এ লেখাটিতে খোলা চোখে এ অবধি যা কিছু দেখেছি, সেইটাকেই প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। একটি বিষয় বলে রাখা ভাল, এই লেখার অনুপ্রেরণা বলতে যদি কোন কিছু থাকে, তাহলে রাজশাহী আদিবাসি খ্রিস্টান হোস্টেল নিয়ে যা কিছু হচ্ছে, সেটারই একটা অনুভুতির প্রতিক্রিয়া বলা যেতে পারে। (রাজশাহী ক্যাথলিক ডায়সিস খ্রিস্টান ছাত্রাবাস)

আমার বাল্যকাল, পড়াশুনা, ঢাকার অদুরে এক বোডিং স্কুলে, প্রাইমারি থেকে মেট্রিক পর্যন্ত। যেখানে 90 শতাংশ বাঙালী ছাত্রদের আধিক্য। শিক্ষক বলতে আমার সময়ে মান্দি সম্প্রদায় থেকে দু’একজন থাকলেও, উত্তরবঙ্গের আদিবাসিদের থেকে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পর্যন্ত ছিল না। সময়টা যদিও উত্তরবঙ্গের আদিবাসিদের জেগে উঠার সময়গুলোতে ছিল না। তাই সেই সময়টাতে আমি বুঝতে পারিনি, ক্ষমতার জন্য চার্চ পলিটিক্সের ঝাঁঝালো জাতিগত বিদ্বেষের বিষবাষ্পের উত্তাপ। কিন্তু একটি বিষয় বুঝতে পেরেছিলাম, আদিবাসিরা খ্রিস্টান সমাজেও কিছুটা হলেও নিচু জাতের প্রজাতি। সেই চার্চের জাতিগত বিভেদের জায়গাটা তুলনামুলক অন্যান্য চার্চ থেকে কম।  কারণ সেখানে একটা বিষয় খুব প্রকট আকারে দেখা যেত, তাহলো - আদিবাসি এবং বাঙালি ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক। যদিও বোডিং -এ প্রেমের সম্পর্ক ঋৃতু বদলের মতই। তারপরও অনেক প্রেমের সম্পর্ক জীবন-সাথি পর্যন্ত প্রবাহিত হয়েছিল বা এখনও হচ্ছে, তবে অনেক পালাবদলের পর। প্রেমের এই সম্পর্কের বেড়াজালে ‍লুকিয়ে ছিল- একেবারে নিজের করে নেওয়া, একেবারে স্বীয় সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার পায়তারা। আর সেই পায়তারা অাজ প্রায় অনেকটাই সফল। আদিবাসি সমাজের অনেক জিনিয়াস আজ প্রায় হারিয়ে গিয়েছে, বাঙালিদের সাথে বিবাহ বন্ধনে অাবদ্ধ হওয়ার জন্যে। আদিবাসি ছেলে-মেয়ে উভয়েই বাঙালিত্বের মাঝে নিজেকে সম্পূর্ণরুপে সর্মপন করেছে। আদিবাসিরা কেউ কোন একজন বাঙালিকে আদিবাসি বানাতে পারেনি, তবে আমার দেখা একটা বিরল ঘটনা ছাড়া। একজন বাঙালী মেয়ে আজ প্রায় পুরোটাই সান্তালি হয়ে গিয়েছে, পরিস্কার সান্তালি ভাষায় কথা বলে, তুখোড় সান্তালি নাচে , সান্তাল কালচারের ডবোক যোহার করে। এটা নিতান্তই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। বরং যারা বাঙালি বিয়ে করেছে, তারা প্রায় সবাই আদিবাসি সংস্কৃতি ভুলে বাঙালি হয়ে গিয়েছে। এখানে নিরবে চলেছে, আদিবাসি নিধোনের এক আবেগিক প্রক্রিয়া। এখানে শুধু বাঙালিদের দোষ দিলে বড় অপরাধ হয়ে যাবে। কারণ আমি যদি আমার পথে স্থির থাকি, তাহলে তো অন্যরা অামাকে বিপথে নিয়ে যেতে পারে না। যদিও আমার বিপথগামী হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন: আমি বুঝতে পারিনি, আমি বিপথে চলে যাচ্ছি। কিংবা উপায় নেই, বিয়ে করতে হবে, কিন্তু আমার চার্চের মধ্যে কোন আদিবাসি পাত্র/পাত্রী নেই। তাই বিয়ে করতে হচ্চে কিছুটা নিরুপায় হয়ে।

আমার কাছে মাঝে মাঝে খুব অবাক লাগে, খ্রিস্টানরা এক চার্চ অন্য চার্চের মধ্যে বিয়ের গড়িমসি করে। কিন্তু আমাদের মেয়েরা যখন মুসলমান ছেলেদের সম্পর্ক গড়ে তোলে, তখন চার্চের কোন ব্যক্তিই যেন সেই দিকে নজর দেয় না, জোরালো আপত্তি তোলে না। যাই হোক, এটা নরমের জোম শক্তের ভক্ত।

উত্তরবঙ্গে আদিবাসিদের মধ্যে প্রথম দিকে যে চার্চ গুলো কাজ শুরু করেছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম ক্যাথলিক এবং লুথারেন চার্চ। তার পর পরই ব্যাপ্টিস্ট এবং অন্যান্য চার্চ তাদের কাজ শুরু করে। এর মধ্যে শুধুমাত্র সান্তালদের মধ্যে বিশ্বেষায়িত চার্চ হিসেবে লুথারেন চার্চ কাজ করে। কিন্তু সেই চার্চ আজ প্রায় মৃতপ্রায়। এটাও চার্চ পলিটিক্সের নির্মম শিকার, তবে অন্য সম্প্রদায় থেকে বেশী  কৌশলে নিগৃহিত হয়েছে বিদেশীদের দ্বারা। আজকের এ অবস্থা দেখে মনে হয়, তারা দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা বিহীন এ চার্চকে পরিচালনা করে আসছিল বলেই , আজ এটা মৃতপ্রায়। আর আদিবাসিদের মধ্যে অন্য সম্প্রদায় এই চার্চের উন্নয়নমুলক সংগঠনগুলোতে ঢুকে পড়াও, চার্চটি মরে যাওয়ার একটা বড় কারণ।  তবে এই চার্চ প্রশংসার দাবিদার এই কারণে যে, আজকে সান্তালি ভাষা, সাহিত্য যে পর্যায়ে গিয়েছে, তা এই চার্চের কল্যাণেই। কিন্তু একে টিকিয়ে রাখা এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যা কিছু করার দরকার ছিল, তারা সেটা করেননি। (অনার্স পড়ুয়াদের উচেছদে তৎপর কর্তৃপক্ষ)

উত্তরবঙ্গে সবচেয়ে সমৃদ্ধশীল চার্চ ক্যাথলিক চার্চ। উত্তরবঙ্গের আদিবাসি  খ্রিস্টানরা আধিকাংশিই এই চার্চের অধীনে। আজকে উত্তরবঙ্গের আদিবাসিরা শিক্ষা দীক্ষায় যে পর্যায়ে গিয়েছে, তা এই চার্চের কল্যানে। উত্তরবঙ্গের আদিবাসিদের জন্য যে কন্ট্রিবিউশন তা চার্চকে অন্য এক পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এই কন্ট্রিবিউশনের আড়ালে, অনেক চোখের জল ঝরে আবার শুকিয়েও গিয়েছে। দিনের পর দিন, ক্ষমতায়নের জায়গায় আদিবাসিরা চরমভাবে নিঃগৃহিত হয়েছে। উত্তরবঙ্গে এই চার্চের ইতিহাস একশ বছরের বেশী, সম্প্রতি সময়ে তারা আদিবাসি সম্প্রদায় থেকে একজন বিশপ বা উচ্চ নীতি নির্ধারক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এই নিয়োগের ফলাফল তাদেরকে অনেক বছর পিছিয়ে দিয়েছে। যেটা তারা কোনদিনও রিকোভার করতে পা্রবে না।  ভাবতে অবাক লাগে, একশ বছর সময় লেগেছে, আদিবাসিদের মধ্যে থেকে নীতি নির্ধারক তৈরী করতে। কিন্তু তাও আবার নামকাওয়াস্তে। সহজ করে বললে ঠুটো জগন্নাথ। কারণ একজনই সেখানে, কিন্তু তার চারপাশে ছড়িয়ে আছে বাঙালী সম্প্রদায়, যারা তাকে পরিচালনা দেয়। এখানে আর একটি বিষয় বলে রাখা ভাল, আমার মনে হয় চার্চরা কোনভাবেই চায়নি যে, তাদের সদস্যরা এগিয়ে যাক, এটা যেকোন চার্চই হোক না কেন! কেন এমন কথা বলছি? ক্যাথলিক চার্চ এর অনেক বড় বড় নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, কিন্তু সেখানে লক্ষ্য করবেন, উচ্চ পদে কোন আদিবাসি ব্যাক্তি নেই। আপাতত দৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে যে, আদিবাসিরা নিজেদেরকে সেই জায়গায় নিয়ে  যেতে পারেননি। হ্যাঁ, কথাটা হয়ত সত্য। কিন্তু এটাও তো সত্য পারে, তাদেরকে সেই পর্যায়ে যেতে দেওয়া হয়নি। কেন? কারণ এই একশ বছরের ইতিহাসে কি, একজন ব্যক্তিকেও সেই পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি? এই কথাগুলো কি ডাল ভাতের মত গিলতে হবে? না এটা ডাল ভাতের মত গিলার বিষয় নয়, একটা সুক্ষ্ণ রাজনীতি তাদেরকে সেই পর্যায়ে যেতে দেয়নি। এর প্রমান সম্প্রতি রাজশাহী হোস্টেলের ঘটনাগুলো (নগরীতে সংবাদ সম্মেলন আদিবাসী ছাত্রদের নির্যাতনের অভিযোগ )। উচ্চ শিক্ষায় কখনও কোন চার্চই তাদের সদস্যদের অনুপ্রানিত করেনি। বরং সেমিনারী বা ইন্টারমিডিয়েট পড়ার পর ঠেলে দিয়েছে, চার্চের ছোট খাটো কোন চাকুরিতে।

ঘটনা প্রবাহ এখন আর ধর্মের অনুশাসনে আবদ্ধ নেই। এটা ছড়িয়ে পড়েছে, ধর্মের অনেক বাইরে। দীর্ঘ দিনের নিষ্পাষিত মন, আজকে বাইবেলের বাণীতে আটকে থাকছে না। যাদের এই বাণী শিক্ষা দেওয়ার কথা, যাদের এই বাণী নিজেদের পরিপালন করে দেখানোর কথা, তারা সেটা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। আজকের এই অবস্থার জন্য যারা রাস্তায় নেমে ধর্মের মুখে চুনকালি দিচ্ছে, তারা কোন ভাবেই দোষী হতে পারে না। কারণ যারা তাদেরকে নামতে বাধ্য করেছে, তারাই এর জন্য দায়ী। কি এক নির্মম পরিহাস আজকে যিশুর সেই বাণী, ‘তুমি প্রতিবেশীকে নিজের মত প্রেম কর, ----শত্রুকেই প্রেম কর, --- সে যদি ক্ষুধিত হয়, তাকে আহার করাও, তৃষ্ণার্ত হলে পান করাও।’ এখানে প্রতিবেশীও নয়, নিজের ভ্রাতা, যেটা যিশু সার্টিফাই করে গিয়েছে। একই বিশ্বাসের লোককে নিজের ভাইয়ের চেয়ে আপন বলেছিলেন যিশু। প্রেরিতরা পরবর্তী সময়, একই বিশ্বাসের লোকদেরকে নিজ বাটির পরিজন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু  আজকে কি দেখতে পাচ্ছি? তারা নিজেদের ভাইয়ের প্রতি কি করছেন? বিশ্বাসবাটির পরিজনের প্রতি এ কেমন আচরণ? (আদিবাসী ছাত্রদের ওপর নির্যাতন, নীপিড়ন ও বৈষম্যের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম অন্যথায় আন্দোলন)।

ছোট বেলায় শিখেছিলাম, ফল দেখে গাছ চেনা যায়। আজকে ধর্মীয় নেতারা কোন ফল উৎপন্ন করছে? তাদেরকে দেখে কি শিখতে পারছি? কি বুঝতে পারছি?  পৃথিবীতে বহু প্রমানিত এই ধর্মকে আজকে তারা অকার্যকর ধর্মে রুপান্তরিত করছে।

উত্তরবঙ্গের আদিবাসিদের মধ্যকার সাংগাঠনিক দূর্বলতার সুযোগে আজ এই বিংশ শতাব্দিতেও আদিবাসিরা নি:গৃহিত। বাঙালীরা খ্রিস্টানরা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার শিখরে অবস্থান করে, আদিবাসিদের কোমর ভাঙ্গার তালে থেকেছে। আজ আদিবাসিরা যখন জেগে উঠার চেষ্টা করছে, তখন ধর্মের মুথে চুনকালি দিয়ে, তা তারা প্রতিহত করছে। বন্ধ হোক এই অনৈতিক, অশাস্ত্রীয় কার্যক্রম। যিশুকে  নোংরা রুপে উপস্থান করা থেকে চার্চের কর্তৃপক্ষরা যত তাড়াতাড়ি বিরত হবেন, ততই মঙ্গল। আমরা যিশুর বাণীর ফল দেখতে চাই। আর নিঃগৃহিত নয়, যিশুর ভ্রাতা হিসেবে আদিবসিরা যোগ্যভ্রাতা হিসেবে অবস্থান চায়। আশা করি, কর্তৃপক্ষ সেই দিকে খেয়াল রাখবেন।   



মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০১৪

১:৪২:০০ PM

জীবনের মানে



কিছুটা ছায়ায়,
কিছুটা উদ্ভাসিত।
কিছুটা মায়ায়,
আবার কিছুটা শঙ্কিত।

ছুটে চলা জীবনের গতি,
মাঝে মাঝে কিছু বিরতি।
ভাবুক মনের কুয়াশা স্বপ্ন,
দিন গুনে দিনের তন্ত্র।

হিমাদ্রির বুকে হেটে চলা একরাশ আনন্দ,
সিংহোল সমুদ্রের বুকে ক্ষনিক ছন্দ।

তারপর তিমির রজনী,
বৃষ্টিধোঁয়ায় মিশে যাওয়া।
আধাঁর আধারির সাথে,
যুগলবন্দি হওয়া।

ভোর হতেই-
জেগে উঠা ঘাস ফুলে,
অনিন্দ্য শিশির কনা।
শুভ্রতায় লুটোপুটি,
খরতাপে সবকিছু হারিয়ে,
দিন শেষে আবার ঘামে ভেজা।

জীবনের মানে কি এতটাই সামান্য?



বুধবার, ৪ জুন, ২০১৪

৬:৫১:০০ PM

বিজ্ঞানের থিউরি এবং ধর্ম


বিজ্ঞান বা ইতিহাস দিয়ে শ্রেষ্ঠ নয় বরং ঠিক কিনা এটা যাচাইয়ের প্রয়োজন আছে থিউরি বা সুত্রের প্রয়োগ তখনি বিভিন্ন হয়, যখন কোন একটি নির্দিষ্ট থিউরি এর উত্তর বা ফলাফল বের করতে পারে না আর যখন অন্য সুত্র প্রয়োগ করে সেই বিষয়টি ভুল প্রমানিত হয়, তখন সেই সুত্রের প্রয়োগের যৌক্তিকতা বিচার করা হয় আর যৌক্তিক বিচারের প্রশ্নে যখন সেটা উতরিয়ে যায়, তখন সেটা সঠিক থিউরি হিসেবে গণ্য করা হয় সুত্র ঠিক থাকলে, বিক্রিয়ায় কোনরুপ পরিবর্তন না করলে উত্তর একই রকম হবে এই রকম বিষয়গুলো বিজ্ঞানে আছে, যা অন্য সুত্র দিয়ে ভুল প্রমানিত হয়েছে তাহলে এইরকম জায়গায় কি করণীয়, বিজ্ঞানীরা সেটাও ঠিক করেছে বা এখন অবধি সেটার গবেষনা চলছে হুবাহু থিউরি প্রয়োগ ক্ষেত্র বা উপাদান যদি না পাওয়া যায়, তাহলে বিজ্ঞান যেভাবে বিশ্লেষণ করে, সেটাকে অনুসরন করে, এর একটি নির্দিষ্ট জায়গায় যাওয়া সম্ভব অর্থাৎ বিরাট পরিসরে বিজ্ঞানের থিউরি কে যেভাবে প্রয়োগ করা হয়, সেই ভাবে প্রয়োগ করে একটা গন্তব্যে পৌচ্ছানো সম্ভব 

যুক্তির বিচারের জায়গায় কোনটাকে নেবেন? আবেগ না থিউরি?

নিম্নের উদাহরণগুলো লক্ষ্য করুন:

উদাহরণ: বিজ্ঞান কিভাবে ধর্মীয় বিশ্বাসকে সমর্থন করতে পারে?
) সান্তালি পৌরনিক কাহিনী মতে : মানুষ সৃষ্টি!
পাখির ডিম থেকে মানুষ সৃষ্টি হয়েছে, পিলচু হাড়াম, পিলচু বুডহি
বিজ্ঞান: মানুষের শরীরে পাখির ডিমের কোন উপাদান নেই। বা এর ডিএনএ এর সাথে মানুষের ডিএনএ এর  কোন সম্পর্ক নেই।
তাহলে এই তত্ত্ব? মিথ্যে
থিউরি বা সুত্র: ডিএনএ বিশ্লেষণ মানুষের প্রাথমিক সৃষ্টিকে স্পষ্ট করেছে আপনি এর অন্য কি থিউরি ব্যবহার করবেন? ডারউইন এর সুত্র? সেটাও আজকে মিথ্যে প্রমানিত হয়েছে
) প্রশ্ন: পৃথিবীতে কেন এত ধর্ম?       
এই প্রশ্নের উত্তর আপনি আবেগ দিয়ে প্রমান করতে পারবেন? না, পারবেন না
তাহলে যুক্তি অথবা বিজ্ঞান কিংবা ইতিহাসের কাছে যেতেই হবে

যুক্তি:
1. ধর্ম কী সৃষ্টিকর্তা তৈরী করেছেন? নাকি মানুষ ?
উত্তর যদি সৃষ্টিকর্তা হয়, তাহলে আবার প্রশ্ন- সৃষ্টিকর্তায় এই পৃথিবীর এত সব ঝামেলার জন্য দায়ী। তাহলে সেই রকম সৃষ্টিকর্তাকে নি:স্বার্থভাবে ভালবাসার কোন কারণ থাকে না বা উপাসনা করারও কোন যুক্তি থাকে না। তাহলে এই যুক্তি অনুসারে এত গুলো ধর্ম সৃষ্টিকর্তা বানাতে পারে না। কারণ তিনি তো সর্ব জ্ঞানী। যদি বানায়, তাহলে তার জ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন উঠবে

2. মানুষই ধর্ম গুলো তৈরী করেছে?
উত্তর যদি সত্যি হয়, তাহলে এই বিশৃঙ্খলার জন্য মানুষই দায়ী। তাহলে, এত ধর্মের মধ্যে কোনটা সঠিক? কারণ একটা টিভি বা মেশিনের জন্য বিভিন্ন রকম ম্যানুয়েল হতে পারে না। যদিও মার্কেটে অনেক নকল ম্যানুয়েল থাকতে পারে, তার মধ্যে থেকে সেই মেশিনকে সঠিক উপায়ে পরিচালনা বা মেরামত করার জন্য সঠিক ম্যানুয়েলের বিকল্প নেই।  একটা মেশিন তৈরীর পর যদি একটা ম্যানুয়েল লাগে, তাহলে মানুষ তৈরীর পর কোন ম্যানুয়েল হয়নি, এটা কি স্বাভাবিক?

উপরোক্ত যুক্তি দুটি যৌক্তিকতা প্রমানের জন্য আপনি কোথায় যাবেন? আপনার আবেগের কাছে? পৃথিবীতে ধর্মপ্রান 400 কোটি মানুষ আছে, এই 400 কোটি মানুষের আবেগের উপর ভর করে সিদ্ধান্ত নেবেন? এই রকমভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়াও  সমীচিন হবে না। তাহলে?

উপরোক্ত প্রশ্নের সঠিক উত্তর খোঁজার জন্য আপনাকে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব নিয়ে বিজ্ঞান ইতিহাসকে সামনে আনতে হবে। এখানেই থিউরি  বা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রগুলো প্রয়োগের জায়গা।

উদাহরণ:
বিজ্ঞান:
মানুষ সৃষ্টি হয়েছে এবং এর বয়স হাজার হাজার বছর। যদিও এই তত্ত্বের প্রমানিত রুপ নিয়ে বিভিন্ন রকম তথ্য আছে। তবুও ধর্মের সাথে একে মিলানোর চেষ্টা করি

ধর্ম:
কোন ধর্মীয় পুস্তকই মানুষ সৃষ্টি এর সময়কালের ইতিহাস সম্বদ্ধে  সঠিকভাবে  তেমন কিছু বলে না, শুধু মাত্র বাইবেল  ছাড়া। তাহলে সেখানেই একটু পরীক্ষা করা যাক। বাইবেল সৃষ্টির 6 দিনসহ বিশ্রামের 1 দিনকে হাজার হাজার বছর সময় ধরে চলেছে বলে বর্ণনা করে। তাহলে এখানে মিল আছে। তাহলে এই ছোট মিলকে ধরে আরও পরীক্ষাটাকে এগিয়ে নেওয়া যাক। বাইবেলের সত্যতা প্রমানের জন্য এখানে যা কিছু লেখা আছে, সেটাকে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। যেমন: সৃষ্টির উপাদান, সময় এবং এতে লেখা ভবিষ্যদ্বানী।

উদা: সৃষ্টির উপাদান পানি, মাটি, গাছপালা, এবং জীবন। এই বিষয়গুলো বিজ্ঞান সমর্থন করে। যেমন: আলো আগে সৃষ্টি হয়েছে, তারপর গাছপালা। বাইবেলেও তাই বলে। এতে লেখা ভবিষ্যদ্বানীগুলোর শতভাগ সত্য হয়েছে, ইতিহাস প্রমান করে।

ভবিষ্যদ্বানী:
খ্রিস্টের জন্মের 600 বছর আগে বাইবেলে দানিয়েলর দ্বারা লেখা হয়েছিল বা ভবিষ্যদ্বানী করা হয়েছিল যে; পৃথিবীতে 7টি পরাশক্তি আবির্ভুত হবে এবং সরাসরি তাদের চরিত্রের বর্ণনা করা হয়েছে। এই 7টি শক্তি পৃথিবীতে পাওয়া গিয়েছে এবং এখন 7তম শক্তি অবস্থান করছে

অন্য কোন ধর্মীয় পুস্তুক কিংবা পৌরনীক কাহিনী উপরোক্ত বিষয়গুলোর কতটুকু কাছাকাছি যেতে পারে? গুলোর মান বিচারের দ্বারা কি সিদ্ধান্ত বা সঠিক যুক্তির  কাছে যাওয়া যায়?
ভাবেই বিজ্ঞান বা ইতিহাস দ্বারা ধর্মীয় সঠিকতা কে বিশ্লেষণ করা যায়

তাহলে প্রশ্নে আসি। পৃথিবীতে কেন এত ধর্ম?
উত্তর: সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক একটি ধর্মই সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন ধর্ম মানুষ সৃষ্টি করেছে। তাই পৃথিবীতে এত ধর্ম। কিন্তু এর মধ্যে একটি সঠিক ধর্ম বা সৃষ্টিকর্তার ধর্ম খুজে পাওয়া সম্ভব। কারণ মানুষের আধ্যাত্মিক জীবনের জন্য একটি সঠিক ম্যানুয়েল অবশ্যই আছে। আর এই সঠিক ম্যানুয়েলকে খুজে নেওয়ার জন্য গবেষণা বা বিশ্লেষনের প্রয়োজন আছে।

অভৌত কোন কিছু উপর হুবাহু কোন সুত্রের প্রয়োগিকতার উপর কিছু সমস্যা আছে। তাই অভৌত মৌলকে বিশ্লেষনের জন্য বিজ্ঞানের  থিউরি বা সুত্রগুলো যেভাবে ব্যবহৃত হয়, সেটার উপর নির্ভর করতে হয়।

অন্য কোন সুত্রে বা বিজ্ঞানের কার্য প্রানালী আছে যা এরকম  ক্ষেত্রে যখার্খভাবে ব্যবহার সম্ভভ?
উদাহরণ:  রাস্তা অনেক বা পথ অনেক কিন্তু যাওয়ার জায়গা একটিই- রকম  হয়, তাহলে উপরোক্ত বিষয় বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিশ্লেষণ সম্ভব। কারণ অনেক রকম জিনিষ পরীক্ষা করে একই ফল পাওয়া যাবে, এটা কি সম্ভব? সেই কারণে এই রকম বিষয়গুলো প্রমান করার জন্য কোন থিউরি তো প্রয়োগ করতেই হবে। যখন এই রকম ক্ষেত্রে সদুত্তর পাওয়া যায় না, তখনি বিভিন্ন রকম থিউরিগুলোর জন্ম লাভ করে। আবার মাঝে মাঝে সেই উদ্দেশ্যের জন্যই বলা হয় যে, ধর্মকে বিজ্ঞানের সাথে তুলনা করা যাবে না? কিন্তু এখানে বলা বিভিন্ন পথ বিষয়টি যদি সত্যি প্রমান করতে হয়, তাহলে হয়ত প্রমানই করা যাবে না, এটা নিজেই একটা বিশৃঙ্থলার মধ্যে পড়ে আছে ফলে ফলাফল স্বরুপ অনেক লোকই পথ হারিয়ে ফেলেছে।

থিউরি ছাড়া কি আসলে কোন জিনিষের গ্রহনযোগ্যতা আছে? আমার জানা নেই।  এবং সাথে সাথে এও বলা যায়যুক্তিহীন আবেগ ছেলেমানুষী




About

Ghonokuasha Baskey is a Santal writer of Bangladesh. He has started writing since 1985.