রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০১১

বন্দি ফ্রেমে স্মৃতির হাতছানি ( পর্ব - 4)


মান্না দে’র গাওয়া ”কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই”
গানটি যদি এ ভাবে গাওয়া যেত -
“বাশারের চা দোকানের সেই আড্ডাটা, আজ আর নেই।
কোথায় হারিয়ে গেল সোনালী বিকেল গুলো সেই, আজ আর নেই।
লা রা লা লা লা 
যোষেফ ইটালীতে, আমোষ কোন অজোপাড়া গায়ে, নেই তারা আজ কোন খবরে।
পাগলা মামা মার্সেল ঘুমিয়ে আছে যে আজ কবরে,
কাকে যেন ভালবেসে আঘাত পেয়ে যে শেষে নিস্তব্ধ হয়ে আছে প্রণয়টা,
মুক্তটা ছুটছে দুরন্ত জীবনের তরে, জীবন করেনি তাকে ক্ষমা হায়।
বাশারের চা দোকানের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই।
কোথায় হারিয়ে গেল সোনালী বিকেল গুলো সেই, আজ আর নেই।
সুমীটা আজ শুধু সবচেয়ে সুখে আছে শুনেছি ডাক্তার স্বামী তার।
হীরে আর জহরতে আগা গোড়া মোড়া সে, গাড়ী বাড়ী সবকিছু দামি তার।
ধর্মীয় কলেজের ছেলে ফিলিপ মূর্মূ, ধর্মের অনুশীলন করত,
আর চোখ ভরা কথা নিয়ে নির্বাক শ্রোতা হয়ে নেলশনটা বসে শুধু থাকতো।
ও     ও   ও
বাশারের চা দোকানের সেই আড্ডাটা, আজ আর নেই।
লা রা লা লা লা
একটা টেবিলে সেই তিন চার ঘন্টা, গোল্ড লিফ আর ঠোটে জ্বলতো
কখনো সান্তাল সমাজ, কখনো সান্তালী মেয়ে এই নিয়ে তর্কটা চলতো
রোদ ঝড় বৃষ্টিতে যেখানেই যে থাকুক
কাজ সেরে ঠিক এসে জুটতাম
চার থেকে শুরু করে জমিয়ে আড্ডা মেরে সাড়ে সাতটায় ঠিক উঠতাম।
বাশারের চা দোকানের সেই আড্ডাটা, আজ আর নেই।
লা রা লা লা লা
কবি কবি চেহারার কাঁধে তে ঝুলানো ব্যাগ, মুছে যাবে সুনীলের নামটা
একটা কবিতা তার হলো না কোথাও ছাপা
পেল না সে প্রতিভার দামটা।
সংগঠনের সোশালে ম্যানেজার নাটকে ইফা সরেন অভিনয় করতো
কাগজের লেখক ডেনিস এসে রোজ কি লিখেছে তাই শুধু  পড়তো।
বাশারের চা দোকানের সেই আড্ডাটা, আজ আর নেই।
লা রা লা লা লা
এই এগারো জন নেই আজ টেবিল টা তবু আছে
এগারোটা পেয়ালা আজো খালি
একি সেই বাগানে আজ এসেছে নতুন কুড়ি
শুধু সেই সেদিনের মালি নেই।
কত স্বপ্নের রোদ উঠে এই চায়ের দোকানে
কত স্বপ্ন মেঘে ঢেকে যায়
কতজন এলে গেল
কতজনই আসবে
চা দোকানটা শুধু থেকে যায়।
বাশারের চা দোকানের সেই আড্ডাটা, আজ আর নেই।
কোথায় হারিয়ে গেল সোনালী বিকেল গুলো সেই, আজ আর নেই।
হুম হুম লা রা লা লা লা।

(পরের পর্বে চোখ রাখুন বাংলাদেশের অজানা সান্তাল যুব সমাজের আরো কিছু কথা নিয়ে ফিরে আসবো)


কোন মন্তব্য নেই:

About

Ghonokuasha Baskey is a Santal writer of Bangladesh. He has started writing since 1985.