বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০১৭

সান্তালদের ঐক্যমত - কিছু ঝাণ্ডাবাজরাই কি অন্তরায়!

সময়ের স্রোতে অনেক কিছু হারিয়ে যায়, কিন্তু লেখনী অনেক কিছু বাঁচিয়ে রাখে। আজকে সোশাল মাধ্যমগুলো মত 
প্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। এখানে স্বাধীনভাবে আমরা আমাদের মতামত ব্যক্ত করতে পারছি। ফলে একে অন্যের মতের বিষয়ে যেমন জানতে পারছি, তেমনি নিজের বা অন্যের সাথে অমিল গুলো দেখতে পাচ্ছি। একটি সমাজের ঐক্যমতের বিকল্প নাই , যদি সেই সমাজ সামগ্রিকভাবে এগিয়ে যেতে চায়। কিন্তু আমরা সবাই কমবেশি ঐক্যমত চাইছি, তারপরও কাছাকাছি আসতে পারছি না। এ রকম হওয়ার মুল কারণ হল - আমাদের মেনে নেয়ার প্রবণতা গুলো কমে যাচ্ছে। হয়ত এটা নিজের ইচ্ছাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে কিংবা নিজেকে ঠিক ভাবার জন্যে, নতুবা কারো দ্বারা বা কোন কিছুর দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার কারণে - এ রকম বিষয়গুলো ঘটতে পারে।

সামাজিক  যোগাযোগ মাধ্যমে - এ বিষয়ে আলোচনা কমবেশি হচ্ছে, বিভিন্ন সমস্যাগুলো চিহ্নিত হচ্ছে, কিন্তু তারপরও কিছু হচ্ছে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার কিছু অংশ এখানে তুলে আনা হয়েছে, বাস্তবতা গুলো অনুধাবন করার জন্যে। যাদের কমেন্ট এখানে রয়েছে, তারাই যে সমাজের ঐক্যমত্যের অন্তরায় এমন নয় বরং এখানে যারা কমেন্ট করেছেন, তারা তাদের মনোভাব ব্যক্ত করেছেন।

আমাদের ঐক্যমত্যের জন্যে আরও পথ খুঁজতে হবে। সমাজে ঐক্যমত আনতে পারলে অনেক কিছুই সম্ভব। বিচ্ছিনতার অন্তরালে যাই থাক, ঐক্যমত্যের জায়গায়গুলো আমাদের বেশি করে অনুসন্ধান করতে হবে।

উক্ত আলোচনায় আমি একটি সূত্র দিয়েছিলাম, সূত্রটি এ রকম - 

"সবাই সবারটা মেনে নিলে ঐক্যমত সম্ভব"

সমাজ মানে আমি বুঝি - বিভিন্ন রঙের বিভিন্ন বর্ণের বিভিন্ন মতের অনেক মানুষের একত্রে বসবাস।

Ramdas Chand Hasda
Ramdas Chand Hasda kurha, right তবে জাতিভেদে সমাজের সঙ্গােও ভিন্ন। আপনি যা বলছেন তা বৈচিত্র্য।
Subas Murmu
Subas Murmu ব্যক্তি বিশেষে বৈচিত্র্য থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সমাজ গড়তে হলে কিছু বিষয়ে অবশ্যই ঐক্যমত্য থাকতে হবে।
Like · Reply · 2 · 21 hrs
অবুঝ বালক
অবুঝ বালক subas আগে তোমার গ্রামের মধ্যে ঐক্যমত গড়ে তোল!!!
Like · Reply · 1 · 5 hrs
Kurha Baskey
Kurha Baskey Subas Murmu আমি সূত্র দিয়েছি। খ্রিস্টানরা তারা তাদের ধর্মীয় অনুশাসন মেনে সমাজে কার্যক্রম করবে। ননখ্রিস্টানরা তাদের ধর্মীয় অনুশাসন মেনে তাদের সামাজের কার্যক্রম করবে।

আমাদের গ্রামে ৪টি পরিবার ননখ্রিস্টান তারা বাহা, সরহাঁয়, ইত্যাদি করছে, সেখানে খ্রিস্টা...See More
Like · Reply · 3 · 5 hrs
Kurha Baskey
Kurha Baskey Subas Murmu হ্যাঁ কিছুটা তো Tradition নষ্ট হচ্ছে। বৈশ্বিক প্রভাবে অনেক Traditionই তো নষ্ট হচ্ছে। বৈশ্বিক প্রভাবে নষ্ট হওয়া ট্র্যাডিশন যদি মেনে নিতে পারি, তবে আমার ভাইয়ের নষ্ট হয়ে যাওয়া ট্র্যাডিশন কেন আমি মেনে নিতে পারছি না?

তাহলে কি আমি ধর্মান্ধ?
Like · Reply · 1 · 5 hrs
Kurha Baskey
Kurha Baskey Ramdas Chand Hasda < kurha, right তবে জাতিভেদে সমাজের সঙ্গােও ভিন্ন। আপনি যা বলছেন তা বৈচিত্র্য।>

আমার মনে হয় শিক্ষার ২টো কারণ আছে।
১। বিবেককে প্রশিক্ষিত করা
২। একটি সার্টিফিকেট লাভ করা।

প্রশিক্ষিত বিবেক অনেক ধরনের জ্ঞানের সমষ্টিতে গড়ে উঠে। আর সেই বিবেক তার সিদ্ধান্ত নিজের মত করে নিতে সক্ষম।
এটা তো সত্য, যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত সে জাতির মধ্যে ততকম কুসংস্কার বিদ্যমান। সাথে সাথে ট্র্যাডিশন থেকেও অনেক বেশি সরে আসে। তাহলে কি শিক্ষা খারাপ?

একজন প্রশিক্ষিত বিবেকধারি মানুষ অন্যকে সম্মান দিতে জানে, নিজের ভাল বোঝার সাথে সাথে অন্যের ভাল বুঝতে পারে।

আবার অপর দিকে ধর্মান্ধ মানুষ, অনেক সময় নিজেকে ঠিক জায়গায় ভাবে ফলে অন্যের বিষয় তার কাছে নগণ্য হয়ে উঠে।
Like · Reply · 1 · 4 hrs
Subas Murmu
Subas Murmu Kurha Baskey দাদা আপনাদের গ্রামে সান্তালদের নিয়ম আলাদা ও খ্রিষ্টান সান্তালদের নিয়ম আলাদা। কিন্তু সবাই সান্তাল দাবি করছেন। অথচ সবার একই নিয়ম নেই। আপনি এখনো বুঝতে পারেননি। এটা হিন্দু - মুসলিমের মত আমাদের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি হয়ে গেছে।

বৈশ্বিক প্রচাবে অবশ্যই পরিবর্তন আসবে। তবে সেটা সবাইকে একসাথে করতে হবে। আমার আপনার ট্র‍্যাডিশন বৈশ্বিক প্রভাবে নষ্টা হয়নি। নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

আর সেই নষ্টামি কেন মেনে নিবো? এক নষ্টামি মেনে নিলে আর একটা চলে আসবে। আমরা চাই নষ্ট হয়ে যাওয়াকে শুধরে দিতে। যেন ভাইয়ে ভাইয়ে আবার একই উৎসবে, এখকই রীতিতে আনন্দে মেতে উঠতে পারি।

ধর্মান্ধ তারাই যারা ধর্মের বেড়া জাল থেকে বের হয়ে নিজের সংস্কৃতিকে গ্রহণ করতে পারেনা। নিজস্ব বিবাহ রীতিতে বিয়ে করতে পারেনা।
Like · Reply · 2 · 2 hrs
Kurha Baskey
Kurha Baskey Subas Murmu < অথচ সবার একই নিয়ম নেই। আপনি এখনো বুঝতে পারেননি। এটা হিন্দু - মুসলিমের মত আমাদের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি হয়ে গেছে।>

প্রথমত আমি মনে হয় এ টুকু বুঝতে পেরেছি, তাহলো বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাব সবার উপরে পড়েছে। বাঙ্গালি পরিচয় ধর্মীয় পরিচয়ে আলাদা হয়েছে। মুসলিম বাঙ্গালি, হিন্দু বাঙ্গালি এ রকম শব্দ এখন বই পত্রে লেখার অপেক্ষা।
বাঙালী জাতি ধর্মের মধ্যে কবে বিলীন হয় এটা দেখার বিষয়। একটা বৃহৎ জাতির এহেন অবস্থা তাহলে সান্তালদের অবস্থা কি হতে পারে?

দ্বিতীয়ত নিয়ম পরিবর্তনের ফলে জাতি পরিবর্তিত হয়ে যাবে, এখনো এমন বিবর্তন ঘটে নাই। সারা দুনিয়ায় আদিবাসীরা অরিজিন থেকে অনেক দুরে সরে এসেছে। আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা এঁর উৎকৃষ্ট প্রমাণ। আফ্রিকার টুটো বৃহৎ আদিবাসি কিন্তু সিংহভাগ ধর্মান্তরিত, তাদেরকে এখনো টুটো নামেই চেনে।

ধর্ম পরিবর্তন জাতিগত নাম মুছেনি। কিংবা তারা অস্তিত্বহীন হয়ে যায়নি। কালচারের পরিবর্তনও তাদের অস্তিত্বহীন করেনি।
এভাবে অনেক উদাহরণ আছে। পরিবর্তন চলমান প্রক্রিয়া, মানুষের মানবিক থেকে আরম্ভ করে সব কিছুতেই। বিভাজন গুলো আরও কাছা কাছি হতে পারে শিক্ষার মাধ্যমে।
Kurha Baskey
Kurha Baskey Subas Murmu < বৈশ্বিক প্রচাবে অবশ্যই পরিবর্তন আসবে। তবে সেটা সবাইকে একসাথে করতে হবে। আমার আপনার ট্র‍্যাডিশন বৈশ্বিক প্রভাবে নষ্টা হয়নি। নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।>

কাউকে দোষ দেয়া আমি যথাযত মনে করি না। কেন? ধরুন ধর্ম। খ্রিস্টান ধর্মের বড় একটা কাজ হচ্ছে, প্রচার করা, খ্রিস্টের অনুসারী করা। ইসলামেরও তাই। তারা কি সেখান থেকে সরে আসবে? না। তাহলে আপনি আমি কি করবো?

নিজের খুঁটি শক্ত করা। নিজের বাড়ি সামলানো। এখন বলতে পারেন আমি তো দুর্বল। তাহলে শক্তিশালী হোন। ভারতের সংবাদ মাধ্যম গুলো যদি মাঝে মাঝে লক্ষ্য করে থাকেন দেখবেন, আরএসএস প্রকাশ্যে বলছে ভারতে হিন্দুর সংখ্যা কমে যাচ্ছে।

জাতিগুলো যতটুকু পারছে, তাদের সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। ধর্ম কে গালিগাল দিয়ে সময় নষ্ট করছে না। আমাদের সেদিকে নজর দেয়া উচিত।
Kurha Baskey
Kurha Baskey Subas Murmu < আর সেই নষ্টামি কেন মেনে নিবো? এক নষ্টামি মেনে নিলে আর একটা চলে আসবে। আমরা চাই নষ্ট হয়ে যাওয়াকে শুধরে দিতে। যেন ভাইয়ে ভাইয়ে আবার একই উৎসবে, এখকই রীতিতে আনন্দে মেতে উঠতে পারি।>

আমি জানি না, এই নষ্টামিটা কি? ধর্ম পরিবর্তন, আধুনিক হওয়া, অন্য সংস্কৃতির দিকে ঝুঁকে যাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমার কাছে নষ্টামি মানে- সন্ত্রাসী হওয়া, অনৈতিক এঁর ভিতর ডুবে যাওয়া, অন্যায় অবিচার এঁর মত খারাপ বিষয়ের সাথে জড়িয়ে পড়া। আমাদের সমাজ কি সে রকম হয়ে গেছে?

ধর্ম পরিবর্তন দুই ভাবে হয়েছে।
১। সুযোগ সুবিধার জন্যে।
২। প্রকৃত আধ্যাত্মিকতার জন্যে।

আপনি ১ নং দলের লোকদের ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারেন, কিন্তু ২নং দের পারবেন না। এশিয়াতে ধর্ম পরিবর্তনের হার বর্তমানে অন্য যে কোণ সময়ের চেয়ে বেশি।

সান্তালদের একটি পরিসংখ্যান আমার কাছে আছে, সেটা এ রকম বাংলাদেশ এবং নেপালে সিংহভাগ ধর্মান্তরিত হয়েছে। ভারতে ধর্মান্তর এঁর হার ৩.৯৬%। যদিও ভারতে ইতিমধ্যে আদিবাসিদের মধ্যে ধর্ম প্রচারের স্থানীয়ভাবে কিছু বিধিনিষেধ আছে, কিন্তু তারপরও এই হার আগামী সময়ে কি হতে পারে? কি ভাবে আটকাবেন?

কালচার পরিবর্তন হতে পারে সামাজ চাইলে। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সবাই চলতে চাইবে সেটাই স্বাভাবিক। এভাবে মেনে নেয়ার মাধ্যমে একটি জায়গায় আসা সম্ভব।

সমাজ এভাবে গতিশীল থাকবে, এগিয়ে যাবে।
Like · Reply · 15 mins
Kurha Baskey
Kurha Baskey Subas Murmu < ধর্মান্ধ তারাই যারা ধর্মের বেড়া জাল থেকে বের হয়ে নিজের সংস্কৃতিকে গ্রহণ করতে পারেনা। নিজস্ব বিবাহ রীতিতে বিয়ে করতে পারেনা।>

আমার মনে হচ্ছে ধর্মান্ধতা ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করছেন। এই শব্দ extremist থেকে উদ্ভূত।
belief in and support for ideas that are very far from what most people consider correct or reasonable
বিয়ে নিজের সংস্কৃতির মাধ্যমে করছে, তবে সম্পূর্ণ রূপে নয়। একটা উদাহরণ দেই -
সান্তালদের Or bapla আছে। এই বিয়ে যদি এখন করেন, তাহলে কি আপনি আইন থেকে রেহাই পাবেন? না, পাবেন না। আপনি কিন্তু দেশের আইনের জন্যে হলেও আপনার সংস্কৃতির অংশ বাদ দিয়েছেন। সময়ের সাথে সাথে আপনার কালচার কিন্তু অটোমেটিক পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। তাহলে এটা কাঁকে দোষ দেবেন?

কোন মন্তব্য নেই:

About

Ghonokuasha Baskey is a Santal writer of Bangladesh. He has started writing since 1985.